এক পশলা বৃষ্টি, অফুরন্ত স্বস্তি

শরতের আকাশে সাদা মেঘ। অথচ কাঠফাঁটা রদ্দুরে ত্রাহি ত্রাহি নাগরিক জীবন। গত কদিনের ভ্যাপসা গরমে হাঁপিয়ে উঠে যেকারো মুখ দিয়েই বেরিয়ে এসেছে, ‘একটু বৃষ্টি হলে রক্ষে হতো।’ শনিবার ভোর থেকেই সূর্যের কোনো দেখা নেই। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ঝরঝর করে ঝড়ে পড়লো, ঘড়ির কাটা তখন আটটা ছুঁই ছুঁই। একপশলা বৃষ্টিতে দিনের শুরুটা বলতে গেলে বেশ স্বস্তিতেই হলো।

গত কদিন বেশ গরম পড়েছিল। রোদের তাপও ছিল প্রখর। সারাদিনের রোদের তেজ থাকতো মাঝরাত অবধি। আবহাওয়া বিভাগ অবশ্য জানিয়েছিল, গরম আরও কদিন থাকবে। তবে বৃষ্টি হলে তাপ কমে আসবে বলেও জানানো হয়েছিল।

দিনের শুরুতে বৃষ্টিতে মোটেই বিরক্তি নেই কারো। বরং ভালোলাগা অনুভব করেছেন অনেকে। যদিও যারা সকালে আকাশে মেঘ দেখে খুব একটা গায়ে মাখেননি তাদের একটু ভিজতে হয়েছে, এই যা। ‘তাও ভাল, যা গরম পড়েছিল। দিনে ঘন ঘন পানির তেষ্টা পেতো। আজ একটু শান্তিতে চলাফেরা করা যাবে।’ বলছিলেন, খিলগাঁয়ের বাসিন্দা মানিক মাহমুদ।

স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বোধ হয় মন চাইছিল বৃষ্টি গায়ে মাখতে। কিন্তু কাঁধে বইয়ের ব্যাগ, উপায় নেই। উত্তরা হাইস্কুল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাফিয়া ফিরোজ সেই অভিব্যক্তিই যেন জানালেন। ‘ইস, ভিজতে মন চাইছে। ঝিরঝির বৃষ্টিতে কার না ভিজতে মন চায় বলুন?’ হ্যাঁ, তাই তো কার না ভালো লাগে উষ্ণতা কাটিয়ে শীতল হতে।

তবে বৃষ্টি নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে বিপত্তিও কম নেই। বৃষ্টি ভাল তবে অতিবৃষ্টি ভাল না। কারণ, একটু ভারি বর্ষণেই তলিয়ে যায় ঢাকার পথঘাট। সেটাও কি কম বিপত্তির? রামপুরার বাসিন্দা ফাতিমা হোসাইন বলছিলেন সে কথাই, ‘আর বলবেন না, একটু বৃষ্টি হলেই বাড়ির সামনে পানি জমে যায়। ড্রেনের পানি, বৃষ্টির পানিতে একাকার। বৃষ্টি ভাল, তবে অতিবৃষ্টি না হলেই বাঁচি।’

শনিবার সরকারি কর্মজীবীদের সাপ্তাহিক ছুটির দিন। আবার অনেকের জন্য দিনটি ব্যস্তারও। দিন পাঁচেক বাদেই ঈদুল আজহা। কোরবানির পশু কেনার কাজটা অনেকে আগেভাগেই সেরে ফেলতে চাইবেন। অন্যান্য কেনাকাটাও তো আছেই। সবমিলিয়ে বৃষ্টি মুখরতায় দিনের শুরুটা আর যাই হোক সবার মধ্যে প্রশান্তি ছড়িয়েছে বললে বাড়িয়ে বলা হবে না। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির দিনে পাতে খিচুড়ি সঙ্গে ইলিশের পদ থাকলে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। ভোজনরশিক বাঙালিতো ছুতো পেলে রসনাবিলাসে মোটেও আপস করে না।



মন্তব্য চালু নেই