এক পোশাকেই লাভ সাড়ে ১২ হাজার টাকা!

মেয়েদের একটি পোশাকের নাম ‘সারারা লেহেঙ্গা’। এর কেনা দাম ছিল ৬ হাজার ৯৯৫ টাকা। সেটি বিক্রি করা হচ্ছিল ১৯ হাজার ৫০০ টাকায়। এই একটি পোশাকেই ১২ হাজার ৫০৫ টাকা লাভ করছিলেন বিক্রেতা!

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের প্রবর্তক মোড়ের মিমি সুপার মার্কেটের ‘ইয়াং লেডি’ নামের একটি দোকানে অভিযান চালিয়ে এ চিত্র দেখতে পান ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই দোকানে আরেকটি পোশাকের পাইকারি মূল্য ছিল ৪ হাজার ৫৫০ টাকা। কিন্তু সেটির বিক্রয়মূল্য রাখা হয় ১৪ হাজার ৫০০ টাকা।

বৃহস্পতিবার ভ্রাম্যমাণ আদালত মিমি সুপার মার্কেট, আফমি প্লাজা ও জিইসি মোড়ের স্যানমার শপিং কমপ্লেক্সের ২০টি দোকানে অভিযান চালান। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম তাহমিলুর রহমান।

প্রতিটি পোশাকে বিপুল মুনাফার চিত্র পেলেও মিমি সুপার মার্কেটে প্রথমবারের মতো অভিযান হওয়ায় ব্যবসায়ীদের জরিমানা না করে সতর্ক করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ইয়াং লেডির মালিক মোহাম্মদ নুরুচ্ছাফা ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে পোশাকে অতিরিক্ত মুনাফা করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমার ভুল হয়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাম সমন্বয় করে নেব।’

এ ছাড়া মিমি সুপার মার্কেটের নিচতলায় আঁচল নামের এক দোকানে একটি শাড়ি বিক্রি হচ্ছিল সাড়ে ৪১ হাজার টাকায়। কিন্তু দোকানের মালিক ও মিমি সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন এ শাড়ি ক্রয়ের কোনো রসিদ দেখাতে পারেননি ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে।

নির্বাহী হাকিম তাহমিলুর রহমান মিমি সুপার মার্কেটে অভিযান শেষে মার্কেটের সব বিক্রেতাকে কাপড়ের দাম সহনীয় পর্যায়ে রেখে বিক্রির নির্দেশ দেন। এ ছাড়া ক্রয়-বিক্রয়মূল্যের রসিদ সংরক্ষণ এবং মার্কেটে অভিযোগ বাক্স রাখার নির্দেশ দেন। আফমি প্লাজা ও স্যানমার শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী সমিতিকেও একই নির্দেশ দেওয়া হয়।

নির্বাহী হাকিম তাহমিলুর রহমান বলেন, ব্যবসায়ীরা পোশাকের গায়ে বিভিন্ন গোপন কোডে পণ্যের দাম লিখে রাখেন। এরপর ইচ্ছামতো দাম হাঁকিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের ঠকিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে ভারতীয় পোশাকের ক্ষেত্রে কয়েক গুণ বেশি দাম রাখছেন। প্রথম দিন বলে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে। এরপর আবারও এসব মার্কেটে অভিযান চালানো হবে।

এদিকে নগরের কর্নেল হাট–বাজারে মূল্যতালিকা না থাকায় চার দোকানিকে পাঁচ হাজার টাকা করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ব্যাটারি গলিতে মূল্যতালিকা না রাখা এবং ওজনে কারচুপি করার দায়ে চার দোকানকে ১৯ হাজার টাকা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যদ্রব্য তৈরির দায়ে চকবাজারের রবিন বেকারি নামের এক প্রতিষ্ঠানকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসব ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম ফোরকান এলাহী, অনুপমা দাশ ও হাসান বিন মোহাম্মদ আলী। প্রথম আলো



মন্তব্য চালু নেই