এক বছরেও শনাক্ত হয়নি বর্ষবরণে নারী লাঞ্ছনাকারীরা

গত বছরের পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারী লাঞ্ছনার বিচার হয়নি এক বছরেও। এমনকি এখনো শনাক্ত হয়নি নারী লাঞ্ছনাকারীরাও।

যদিও পুলিশ বলেছিল, তারা ওই এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ থেকে সন্দেহভাজন আট লাঞ্ছনাকারীকে শনাক্ত করেছে, কিন্তু এক বছরে গ্রেপ্তার হয়েছে মোটে একজন।

আলোচিত এ মামলা শাহবাগ থানা ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাত ঘুরে আদালতের নির্দেশে এখন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তাধীন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, “নববর্ষে নারী লাঞ্ছনার মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে দেখছে। তারা যদি তদন্তে ডিবির সহায়তা চায় তাহলে তা দেয়া হবে।”

পহেলা বৈশাখের ওই ঘটনায় পুলিশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে যে মামলা করেছিল, তার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছিল। কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় মামলাটি আদালত নিষ্ক্রিয় করেছিলেন। পরে এ বছরের ২৭ জানুয়ারি পুরান ঢাকার চকবাজার থেকে মো. কামাল নামের একজনকে গ্রেপ্তারের পর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়।

গত বছর পয়লা বৈশাখে টিএসসির কাছে নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমগুলোতে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। পুলিশ প্রথম দিকে এটি আমলে না নিলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সংগঠনের বিক্ষোভ ও দাবির মুখে শাহবাগ থানায় মামলা করে পুলিশ।

এরপর ডিবি পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শী ও সিসিটিভির ফুটেজ থেকে আট সন্দেহভাজনের ছবি প্রকাশ করে গণমাধ্যমে। অভিযুক্তদের ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা করে মোট আট লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। কিন্তু পুলিশ এ ঘটনায় তখন অভিযুক্তদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ফলে শাহবাগ থানার করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ওই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ওই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন।

এর প্রায় নয় মাস পর এ বছরের ২৭ জানুয়ারি পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকা থেকে কামালকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে গোয়েন্দা পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার নির্দেশ দেন আদালত। তবে কামালকে গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দা পুলিশ দাবি করে, তারা নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমেই অভিযুক্ত কামালকে গ্রেপ্তার করেছিল। পরে আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআইকে)।

পিবিআইকে আগামী ১৭ এপ্রিল এ মামলার পুনঃ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন আদালত।

জানতে চাইলে পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার আহসান হাবীব পলাশ বলেন, “ঘটনার যে ফুটেজ হাতে পাওয়া গেছে, তা খুব একটা পরিষ্কার নয়। সে কারণে তদন্তে কিছুটা সময় লাগছে। তবে আমরা দ্রুত তদন্ত শেষ করতে চেষ্টা করছি।”



মন্তব্য চালু নেই