এক রানের আফসোস

বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। ম্যাচটিতে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রান তুলেছে ভারত। জবাবে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ১৪৫ রানে। ফলে এক রানের আফসোসের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে মাশরাফি বাহিনী।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আশিষ নেহরার প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান তামিম। কিন্তু বাউন্ডারি হবে কি হবে না, তা নিয়ে ছিলেন শঙ্কায়। তাই অপর ওপেনার মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে জায়গা বদল করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে উইকেটের মাঝখানে আসতেই বোলার নেহরার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তামিম। মাথায় আঘাত লাগায় অনেকক্ষণ শুয়ে থাকেন বাংলাদেশের এই ওপেনার। শুশ্রূষার পর ফের ব্যাটিং শুরু করেন তিনি। ওই ওভারের পঞ্চম বলেই আউট হওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন তামিম। নিজের বলে নিজে ক্যাচ নিতে পারেননি নেহরা। বেঁচে গেলেন তামিম!

দলীয় ১১ রানের মাথায় বাংলাদেশ শিবিরে আঘাত হানেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ভারতের স্পিনারের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে হার্দিক পান্ডের হাতে ক্যাচ তুলে দেন মোহাম্মদ মিঠুন। ৩ বল খেলে ১ রান করেই সাজঘরে ফেরেন বাংলাদেশের এই ওপেনার। তামিমের সঙ্গে পরিবর্তিত ওপেনিং জুটিতে এসে এ কী করলেন মিঠুন? পারলেন না নামের প্রতি সুবিচার করতে।

পঞ্চম ওভারে ফের জীবন পান তামিম। অশ্বিনের বল শুন্যে ভাসিয়ে দেন তিনি। ক্যাচটি লুফে নিতে ব্যর্থ হন জসপ্রীত বুমরাহ। তবে দুইবার জীবন পেয়েও খুব একটা সুবিধা করতে পারলেন না তামিম।রবিন্দ্র জাদেজার বলে ধোনির কাছে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন বাংলাদেশের সেরা এই ওপেনার। বিদায়ের আগে ৩২ বলে পাঁচটি চারে তামিমের ব্যাট থেকে আসে ৩৫ রান।

ভালোই খেলছিলেন সাব্বির রহমান রুম্মান। কিন্তু সামান্য ভুলেই শেষ হয়ে গেল তার পথচলা। ভারতের পার্টটাইম বোলার সুরেশ রায়নার বলে শট নেন সাব্বির। কিন্তু ব্যাটে বলে ঠিকমতো হয়নি তার। একটা পা ভেতরেই ছিল, কিন্তু একটা সেকেন্ডের জন্য মাটি থেকে তার ওপরে উঠে যায়। ওই সময়েই স্টাম্প ভেঙে দিলেন ধোনি। মুখ ভার করে সাব্বির বেছে নিলেন সাব্বির। ১৫ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ২৬ রান করেন তিনি।

সাব্বিরের বিদায় পর ব্যাট হাতে নেমে পড়েন অধিনায়ক মাশরাফি। কিন্তু দ্রুতই ক্রিজ ছাড়লেন তিনি। জাদেজার বল খেলতে গিয়ে সামনে এগিয়ে আসেন। কিন্তু বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন টাইগার দলপতি। পাঁচ বলে ৬ রানেই বিদায় নেন তিনি। আশা জাগিয়েছিলেন সাকিব আল হাসানও। কিন্তু ২২ রানেই থামে তার ইনিংস। হার্দিক পান্ডের বলে সুরেশ রায়নার হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে ১৫ বলে দুটি ছক্কায় ইনিংসটি সাজান তিনি।

এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন সুরেশ রায়না। ২৩ বলে একটি চার ও দুটি ছক্কায় ইনিংসটি সাজান তিনি। স্বাগতিকদের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪ রান আসে বিরাট কোহলির ব্যাট থেকে।

বাংলাদেশের পক্ষে সেরা বোলার মুস্তাফিজুর রহমান। ৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে দখলে নেন দুই উইকেট। আল-আমিন হোসেনও নিয়েছেন দুটি উইকেট। তবে ৪ ওভারে তিনি খরচ করেছেন ৩৭ রান। ১ ওভারে চার রান দিয়ে একটি উইকেট নিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। একটি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান, শুভাগত হোমও।

বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ মিঠুন, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহীম, শুভাগত হোম, মাশরাফি বিন মর্তুজা, আল আমিন হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান।

ভারতের একাদশ: রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিং ধোনি, সুরেশ রায়না, যুবরাজ সিং, হার্দিক পান্ডে, রবিন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, আশিষ নেহরা ও জসপ্রীত বুমরাহ



মন্তব্য চালু নেই