এক সৌদি সুন্দরী তরুণীর অভিজ্ঞতা!

সারাহ মিশরি, সৌদি আরবের এক সুন্দরী তরুণী। তবে তিনি গত ১০ মাস ধরে ইরানে বসবাস করছেন। পড়াশোনা করার জন্যই মূলত ইরানে আসা। ইরানে নিজের অভিজ্ঞতার কথা সামাজিক মাধ্যমে লিখে জানান সারাহ।

তিনি লিখেছেন, সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক রয়েছে এই বিষয়টি গোপনীয় নয়। হজের সময় সৌদিতে ক্রেন দুর্ঘটনা ও মিনায় পদপিষ্ট হয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তা স্পষ্ট হয়ে উঠে। ইরানের অনেক সাহিত্য ও কাহিনী পড়েছি। ইরানের প্রতি দুর্বলতার জন্যই লন্ডন থেকে ইরানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। আমার এই সিদ্ধান্ত পরিবারের কোন সদস্য মেনে নেয়নি। তারা আমাকে সবাই বাধা দেয় ইরানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার জন্য।

আমি ইরানে আসার পরে একজন জিজ্ঞেস করেন ইরানে আপনার নেতিবাচক অভিজ্ঞতা কি? উত্তরে আমি তাদের বলি এখনো কোন নেতিবাচক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হইনি।

হজ করতে গিয়ে সৌদিতে শতশত ইরানি নাগরিকের প্রাণহানির জন্য সৌদি নাগরিক হিসেবে ইরানের কোন নাগরিক আমাকে বিন্দুমাত্র বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেনি। আমি সুন্নি নাগরিক হলেও ইরানের নাগরিকরা আমার প্রতি যত্নের কোন হেরফের করেনি।

ইরানিরা অনেক দয়ালু ও আন্তরিক। তারা মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশ থেকে সত্যিই ভিন্ন। ভিন্ন ভিন্ন মানুষের রাজনৈতিক আদর্শ ভিন্নরকম। আমি যখন কথা বলি ইরানিরা আমাকে ভারতীয় নাগরিক মনে করে। আমার ফার্সি উচ্চারণের জন্যই আমাকে ভারতীয় নাগরিক মনে করেন তারা।

যখন জানতে পারে আমি সৌদির নাগরিক তখন আরো বেশি আগ্রহ নিয়ে আমার কাছে আসে তারা। জানতে চায় সৌদির নাগরিক হয়েও কেন ইরানে থাকছি। আমি ইরান পছন্দ করি কি না এসব বিষয় জানতে চায় তারা। আমি ইরানের অনেক অঞ্চল ভ্রমণ করেছি। ইরানে দেখার মতো অনেক সুন্দর সুন্দর শহর রয়েছে। ইরানিদের আন্তরিকতা আমাকে মুগ্ধ করে।

একবার ব্যাগ হারিয়ে গিয়েছিল। ব্যাগে ড্রাইভিং লাইসেন্স, আইডিসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিল। আমার বন্ধু ও পুলিশ বলছিল এটি পাওয়া যাবে না। আমার মন ভিষণ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তার কিছুদিন পরেই এক মহিলা আমাকে ফোন দিয়ে জানায় সে একজন ট্যাক্সি চালকের স্ত্রী। তার স্বামীর ট্যাক্সি থেকে একটি ব্যাগ পেয়েছেন। পরে ব্যাগটি আমাকে ফেরত দেয়।

সারা পৃথিবীতে উগ্রবাদী রয়েছে শুনেছি তবে ইরানে একজনও উগ্রবাদী দেখিনি। মিনা দুর্ঘটনার পরে আমার সঙ্গে কেউ খারাপ ব্যবহার করেনি। আগে তারা আমার সঙ্গে যে ব্যবহার করত মিনা দুর্ঘটনার পরেও একই ব্যবহার করছে কোন ব্যতিক্রম ব্যবহার করেনি।

মিনা ট্রাজেডির পরে একদিন আমি একটি ক্যাফেটেরিয়ায় দুপুরের খাবার খেতে যাই। সেখানে আমার ইরানের এক বন্ধু দুষ্টুমী করে রেষ্টুরেন্টের ক্যাশিয়ারকে বলে আমার কাছে কোন খাবার বিক্রি না করে কারণ আমি সৌদির নাগরিক। সঙ্গে সঙ্গে ইরানের কয়েকজন এসে তাদের দেশের নাগরিকের এমন বিরুপ আচরণের জন্য আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। পরে আমি তাদের বলি আমরা মজা করছি, আমরা দুই জন বন্ধু।



মন্তব্য চালু নেই