এখনো ৩ কোটিরও বেশি সিম অনিবন্ধিত

নগদ অর্থ ও পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েও তেমন কাজ হচ্ছে না। আর মাত্র তিনদিন বাকি বায়োমেট্রিক সিম রেজিস্ট্রেশনের। অথচ এখনো তিন কোটির বেশি সিম নিবন্ধিত হয়নি। তবে শেষ মুহূর্তে গ্রাহকরা ‘সংযোগে ত্রুটির’ জটিলতার মুখোমুখি হতে পারেন যাতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত সিমের ব্যবহারে বিপত্তি ঘটতে পারে।

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনঃনিবন্ধনের নিরাপত্তা নিয়েও বিতর্ক চলছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন গ্রাহক রিটেইলার বা অপারেটরদের এজেন্টদের কাছে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ করেছেন বিটিআরসির কাছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমেও এমন অভিযোগ আসছে। একাধিক সিম ব্যবহারকারী একই ব্যক্তি একটি অপারেটরে পুনঃনিবন্ধনের পর অন্য সিম পুনঃনিবন্ধন করতে গিয়ে আঙ্গুলের ছাপ না মেলার মতো বিড়ম্বনায় পড়ছেন। বিনামূল্যে নিবন্ধনের করানোর কথা থাকলেও প্রায় সব রিটেইলারই গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন।

এদিকে অপারেটরদের এজেন্টরা গ্রাহকদের আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ ও সনাক্তকরণে তাদের ঘন ঘন নেটওয়ার্ক বিপত্তি অথবা মারাত্মক ডাউন প্রবলেমের মধ্যে পড়তে হচ্ছে বলে জানান। তবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) সচিব ও মুখপাত্র সারোয়ার আলম জানান, সকল অপারেটরকে তারা সার্ভারের সঙ্গে সংযোগ নিরবিচ্ছিন্ন রাখার নির্দেশ দিয়েছেন যাতে মোবাইল ফোন গ্রাহকরা কোন হয়রানি ছাড়াই নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারেন।

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনঃনিবন্ধনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিটিআরসি মহাপরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এমদাদ উল বারী বুধবার জানান, এখন পর্যন্ত ৯ কোটি ৭০ লাখ ৮৫ হাজার সংযোগ নিবন্ধিত হয়েছে। যেখানে মোবাইল সংযোগ (সিম) রয়েছে ১৩ কোটির বেশি। যারা ৩১ মে এর মধ্যে নিবন্ধন করবেন না, ১ জুন থেকে তাদের সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনঃনিবন্ধনের সময় রিটেইলাররা গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে এমনটা স্বীকার করে মহাপরিচালক বলেন, ‘সিম নিবন্ধনে রিটেইলারদের দ্বারা বিভিন্নভাবে প্রতারিত হচ্ছেন গ্রাহকরা। এ নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি আশুলিয়ায় একজন রিটেইলার গ্রাহকের অসাবধানতার সুযোগে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে একাধিক সিম নিবন্ধন করে। গ্রাহক সাবধান থাকলে এমনটা সম্ভব হতো না।’

গ্রাহকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নিবন্ধনের সময় গ্রাহকরা যতবার আঙ্গুলের ছাপ দিচ্ছেন ততবার যে নম্বরগুলোকে রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে তা যাচাই করে নিতে হবে। কারণ নিবন্ধনের সময় মেসেজ দিয়ে গ্রাহককে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। সুতরাং এটি যাচাই করা খুব একটা কঠিন নয়। অন্যথায় রিটেইলারদের দ্বারা প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।’

অবশ্য বিটিআরসি গ্রাহকদের কাছ থেকে অভিযোগ গ্রহণের জন্য তাদের কোড ‘২৮৭২’ চালু করেছে। সপ্তাহের পাঁচদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই কোড নম্বরের মাধ্যমে তারা অভিযোগ গ্রহণ করবে।

সরকার গত বছর ১৬ ডিসেম্বর বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনঃনিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করে, নির্ধারিত সময়সীমা অনুযায়ী তা গত ৩০ এপ্রিল শেষ হয়। পরে অপারেটরদের অনুরোধে ৩১ মে পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।



মন্তব্য চালু নেই