এটা এরশাদের বিয়ের ছবি নয়, তাহলে কীসের?

সম্প্রতি ফেসবুকে প্রকাশিত কিছু ছবি নিয়ে এরশাদকে ঘিরে নানা মুখরোচক আলোচনা চলছে। ছবিতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে টুপি পরিহিত অবস্থায় ঘোমটা মাথায় দেয়া এক নারীর সঙ্গে মোনাজাতরত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। ওই কক্ষে আরো বেশ কিছু সংখ্যক টুপি পরা মানুষকে দেখা যাচ্ছে। অন্য ছবিগুলোতে ওই নারীর সঙ্গে এক টেবিলে বসে এরশাদকে খেতে দেখা যাচ্ছে। ওই নারী তাকে যত্নে তরকারি তুলে দিচ্ছেন আর এরশাদ মাথা নিচু করে খুব মনোযোগের সাথে খাচ্ছেন।

এই ছবিগুলো দেখে অনেকেই মনে করছেন, এরশাদ আবারো বিয়ে করেছেন! বেশ কয়েক দিন ধরেই এ নিয়ে কানাঘুষা চলছে। গুজব ছড়াতেও কম করছেন না অনেকে।

তবে বিয়ের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন পার্টির নেতা ও এরশাদের ঘনিষ্ঠজনরা। তারা বলছেন, এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানোর হয়েছে। ওই নারী পার্টিরই এক নেত্রী যার সঙ্গে এরশাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। ছবিগুলো আসলে একটি মিলাদ অনুষ্ঠানের।

জাতীয় পার্টির একটি সূত্র জানায়, এরশাদের পাশে মোনাজাতরত যে নারীকে দেখা যাচ্ছে তিনি পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার। ছবিটি গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার জাতীয় পার্টির একটি অফিস উদ্বোধন করার পর মোনাজাতের সময় তোলা। দিলারা খন্দকার পলাশবাড়ী-সাদুল্ল্যাপুর নির্বাচনী এলাকার নেতা।

জাতীয় পার্টির এক প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এই ছবিটা বেশ কয়েক বছর আগের। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ব্যারিস্টার দিলারা ওই আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, এরশাদের নির্দেশে যে অংশটি নির্বাচনে যায়নি এবং পরে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন ব্যারিস্টার দিলারা তাদের মধ্যে একজন। এর আগে এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিলেন দলের বহিষ্কৃত এবং কাজী জাফরের জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. টিআইএম ফজলে রাব্বী।

এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির এক নেতা বলেন, স্যার দিলারাকে দলীয় একজন কর্মী হিসেবে পছন্দ করেন বলেই যুগ্ম মহাসচিব পদ দিয়েছেন। ফেসবুকে বিয়ের যে কথা বলেছে, এটা ডাহা মিথ্যা।

এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেসসচিব এবং পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় শুক্রবার রাতে বলেন, ‘এটা পলাশবাড়ী একটি মিলাদের ছবি। কোনো ধরনের যাচাই, বাছাই না করে এই ছবিকে বিয়ের ছবি বলে প্রচার করে অন্যায় করা হচ্ছে। আমাদের অফিসে এমন হাজারো ছবি আছে। সব ছবিকে কী তাহলে বিয়ের ছবি বলে প্রচার করা হবে? পোস্টটি রুচিতে বাধে। এনিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না। একটি কথা বলি, এটি সম্পূর্ণ বোগাস।’

2016_04_09_02_04_30_8lSvhvnlpBUeoD4EGUIG3RSfYMDV6z_original

অবশ্য এরশাদকে নিয়ে এমন রটনা খুবই সম্ভব। কারণ তিনি অনেকবার এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। বিদিশাকে ডিভোর্স দেয়ার পর একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর গুজব শোনা যায়। অবশ্য এরপর আর বিয়ের গুজব কখনো ওঠেনি।

এদিকে প্রথম স্ত্রী রওশনের কাছ থেকে দীর্ঘ দিন ধরেই আলাদা থাকেন এরশাদ। বিরোধী দল হয়ে বর্তমান সরকারের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। সর্বশেষ ছোট জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান ঘোষণার পর থেকে রওশনই একপ্রকার আত্মসমর্পণ করেছে। তবে তাদের মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ নেই বললেই চলে। এরশাদ থাকেন বারিধারা আর রওশন থাকেন গুলশানে। ব্যারিস্টার দিলারার বাড়িও গুলশানে বলে জানা গেছে।



মন্তব্য চালু নেই