এটা রোগ নাকি অন্য কিছু: আইজিপি

সরকারি চাকরির মত নিশ্চিন্ত পেশা ছেড়ে দিয়ে কেউ কেউ কেন জঙ্গি তৎপরতায় জড়াচ্ছে সেটা ভেবে পান না পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক। মিরপুরের রূপনগরে পুলিশের অভিযানে নিহত জাহিদুল হকের কথা উল্লেখ করে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘কেন তারা এ কাজ করেন, এটা কি কোনো রোগ?’

বিকালে পুলিশ সদরদপ্তরে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক মত বিনিময় সভায় তিনি এই সতর্কতার কথা বলেন।

গত শুক্রবার রাতে রূপনগর অভিযানে নিহত হন জাহিদুল। তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম মুরাদ, জাহাঙ্গীর বা ওমর জানা গেলেও পরে তার আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানতে পেরেছে তার প্রকৃত নাম জাহিদুল ইসলাম। তিনি সেনাবাহিনীতে মেজর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

জাহিদ বছর আড়াই আগে জঙ্গি মতবাদে উদ্বুদ্ধ হন আর এক বছর আগে চাকরি ছেড়ে অবসরে যান। গত এপ্রিলে তিনি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হন। এই জাহিদুলিই গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান এবং ৭ জুলাই কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলাকারীদের প্রশিক্ষক ছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

পুলিশ প্রধান বলেন, ‘মেজর সাহেবও কীভাবে চাকরি ছেড়ে গিয়ে জঙ্গিবাদে জড়ালেন তা আমি বুঝতে পারছি না। এটা কি কোনে রোগ নাকি অন্য কিছু? তার স্ত্রী আছে, সন্তান আছে তবু সে কীভাবে এখানে জড়ালো সেটা এক প্রশ্ন।’

সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতায় নাটের গুরু হিসেবে চিহ্নিত তামিম চৌধুরী নিহতের বিষয়টি উল্লেখ করে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘বর্তমানে জঙ্গি তৎপরতা মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে। তবু আমাদের অভিযান চলছে আর এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’ তবে তামিম চৌধুরী নিহত হলেও তার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী এখনও সক্রিয় আছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।

তামিম চৌধুরী গত ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় অভিযানে দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীসহ নিহত হয়েছেন। এরপর গত শুক্রবার মিরপুরের রূপনগরে অভিযানে নিহত হন হলি আর্টিজান বেকারি ও শোলাকিয়া হামলাকারীদের প্রশিক্ষণদাতা হিসেবে চিহ্নিত জাহিদুল ইসলাম।

আইজিপি বলেন,‘ বাংলাদেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতায় সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিলেন তামিম চৌধুরী। এর ওপরে আর কেউ নেই। এরপর আছেন সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক।’ তিনি বলেন, ‘জিয়া ছাড়াও আরও দুই এক জন এখনও রয়ে গেছেন। তাদেরকে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে জঙ্গিরা এখন মোটামুটি দুর্বল অবস্থানে আছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ প্রধান বলেন, তার বাহিনী জঙ্গিদের রুখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা পাকিস্তান হতে দেবো না। এ জন্য সব মহলকে এগিয়ে আসতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের জিহাদী বই থাকে এবং কোনো শিক্ষক যদি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে জঙ্গিবাদের কথা বলার চেষ্টা করে তবে শিক্ষার্থীরা যেন পুলিশকে খবর দেয়।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ‘বাড়ির মালিকরা ফ্যামিলির কাছ থেকে যে হারে ভাড়া নেয়, ব্যাচেলরদের কাছ থেকেও সে হারেই ভাড়া নিতে হবে। এর বেশি নেয়া চলবে না।



মন্তব্য চালু নেই