এত তথ্য থাকলে খুনের তথ্য পান না কেন?

দেশে অব্যাহত গুপ্তহত্যার জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যকে ‘অসত্য, বানোয়াট, ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি।

বিভিন্ন হত্যার প্রসঙ্গ তুলে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেছেন, তার কাছে যদি এতই তথ্য থাকে, তা হলে খুনের তথ্য পান না কেন?

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফখরুল। তিন দেশ সফর শেষে বুধবার গণভবনে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।

ফখরুল দাবি করেন, ‘বিএনপি জঙ্গিবাদকে কখনোই সমর্থন করে না।’ বলেন, ‘একে সমূলে নির্মূল করার জন্য সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত।’

বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে দেশে যেসব গুপ্তহত্যা হয়েছে তার সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত কর্মীদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সরকারের কাছে ওইসব অভিযুক্ত ব্যক্তিদের জড়িত থাকার বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে।’

মির্জা ফখরুল প্রশ্ন তোলেন, ‘হেড অব দ্য গভর্নমেন্ট হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যদি এতই তথ্য থাকে, তা হলে নাটোরের উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন বাবু, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা, বিডিআর হত্যাকাণ্ড এবং নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কোনো তথ্য পাননি কেন?’

তিনি বলেন, ‘কোনো অঘটন ঘটলেই প্রধানমন্ত্রী বরাবরের মতো বিএনপিকে আক্রমণ করে বক্তব্য দেন। কোনো রকম তথ্য-উপাত্ত ছাড়াই বলে দেন বিএনপি জড়িত। এসব হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের তথ্য বের করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েই সরকার বিএনপি-জামায়াতকে দোষারোপ করছে।’

জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান সরকার বারবার বলছে তারা জঙ্গি দমন করেছে, দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছে। এটা যদি সত্য হয়, তাহলে জঙ্গিদের এত তীব্র উৎপাত শুরু হলো কী করে? নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যেও কিভাবে তারা জীবনবিনাশী কর্মকাণ্ড একের পর এক সংঘটিত করে যাচ্ছে?’

জঙ্গিবাদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের মন্ত্রীরা একেক সময় একেক ধরনের বক্তব্য রাখছেন, এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাদের স্ববিরোধী কথাবার্তার মধ্যেই মনে হয়, কোথাও কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জঙ্গিবাদ কাউকেই সাহায্য করবে না। জঙ্গিবাদ দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করে দেবে। চোখের সামনে ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের অবস্থা দেখছি। তাই সমস্যার গুরুত্ব উপলব্ধি করে আমাদেরকে এর সমাধানের পথ বের করতে হবে। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে এদের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করতে হবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ-দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, যুবদলের দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সম্পাদক কাজী রফিক, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই