এবার পাকিস্তানি লেখক ‘মান্টো’র চরিত্রে নওয়াজউদ্দিন

এই মুহূর্তে বলিউডের অন্যতম মেধাবী অভিনেতাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত আর ক্ষুরধার অভিনেতা ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর’ খ্যাত তারকা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী। মুক্তির প্রতীক্ষায় থাকা গুরু অনুরাগ কাশ্যপের আসন্ন সিনেমা ‘রামন রাঘব’ নিয়ে বর্তমানে বিশ্বের জৌলুসময় কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে থাকলেও এরইমধ্যে ঘোষণা হয়ে গেল তার আরো একটি নতুন ছবির! যে ছবিতে নওয়াজকে দেখা যাবে উপমহাদেশের প্রখ্যাত লেখক পাকিস্তানি সাদত হাসান মান্টো’র চরিত্রে!

গুরু অনুরাগ কাশ্যপের ছবিতে বহুদিন পর আবার অভিনয়ে ফিরেছেন নওয়াজউদ্দিন। আর গুরুর ছবিতে ফিরেই রীতিমত চারদিকে বাজিমাৎ করে দিয়েছেন তিনি। ছবিটি বলিউডের পর্দায় এখনো মুক্তি না পেলেও এরইমধ্যে ৬৯তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটির প্রদর্শনী হয়েছে। গত ১৬মে কানের মূল থিয়েটারে বিশ্ব সিনেমার হাজারো গুণী মানুষের সামনে প্রদর্শীত হয় সিনেমাটি। যথারীতি ছবিটি শেষ হওয়ার পর স্ট্যান্ড অভেশন পায় নওয়াজসহ গুটা টিম। ছবিটি শুধু প্রদর্শনীই নয়, বরং ডিরেক্টর অব ফোর্ড বিভাগে প্রতিযোগিতায়ও লড়ছে। ভাগ্য ভালো থাকলে হয়তো জিতেও যেতে পারে ছবিটি। এরকম পরিস্থিতিতে কানে যখন নওয়াজের প্রশংসায় সকলে ভাসছেন, ঠিক তখনই ঘোষণা আসলো আরো একটি অসাধারণ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য চূড়ান্ত হয়েছেন নওয়াজউদ্দিন।

হ্যাঁ। বলিউডের মেধাবী অভিনেত্রী ও নির্মাতা নন্দিতা দাশ সম্প্রতি একটি সিনেমা বানানোর ঘোষণা দিয়েছেন। ছবিটি তিনি করতে চান উপমহাদেশের প্রখ্যাত লেখক, কথা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক সাদত হাসান মান্টো’র জীবনী নিয়ে। আর এই ছবিতেই মূল চরিত্র মান্টো হিসেবে নন্দিতা ঘোষণা করেছেন নওয়াজের নাম। এমন ঘোষণা নন্দিতা কান চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়ে নওয়াজের সঙ্গেই ঘোষণা করেন।

এটি নন্দিতা দাশের দ্বিতীয় সিনেমা। অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও ২০০৮ সালে প্রথমবার নির্মাণে হাত দিয়েছিলেন নন্দিতা। ‘ফিরাক’ নামের একটি ছবি দিয়ে পরিচালনায় নাম লেখান তিনি। সে ছবিতে নাসিরুদ্দিন শাহ দুর্দান্ত অভিনয় করে আন্তর্জাতিকভাবে দারুন প্রশংসা পেয়েছিলেন। আর সে ছবিটিতেও ছোট্ট চরিত্রে ছিলেন নওয়াজউদ্দিন।

পাকিস্তানি লেখক সাদত হাসান মান্টোকে নিয়ে বহুদিন ধরেই নাকি ভাবছিলেন নন্দিতা। সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে উঠছিল না তার। যদিও প্রথম থেকেই মান্টো’র চরিত্রে নওয়াজকেই ভেবে আসছিলেন নন্দিতা। তবে আর দেরি নয়, শিগগিরই হাতেনাতে কাজে নেমে পড়তে চান নন্দিতা। ‘মান্টো’ হিসেবে ছবিটির নামও এরমধ্যে ঠিক করে ফেলেছেন তিনি। চলতি বছরের শেষ দিক থেকে মুম্বাই ও লাহোরে শুটিং সেট নির্মাণ করবেন বলেও জানালেন।

প্রসঙ্গত, ১৯১২ সালে পাকিস্তানে জন্ম নেন সাদত হাসান মান্টো। দক্ষিণ এশিয়াতো বটেই বিশ্বসাহিত্যের অঙ্গনেও তাকে দাপটে ছোটগল্পকার হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়। অনুবাদেও তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন। প্রাতিষ্ঠানিত পড়াশোনা না করেও বিদেশী সাহিত্য উর্দু ভাষায় অনুবাদ করতে গিয়ে মান্টো যেন অন্য জগতের সন্ধান পান। কিংবদন্তি লেখক ভিক্টর হুগো, অসকার ওয়াইল্ড এবং রাশিয়ান লেখক আন্তন চেখব, ম্যাক্সিম গোর্কী প্রমুখের সাহিত্য কীর্তির সাথে পরিচিত হন নিবিড়ভাবে। তার বিখ্যাত গল্পের মধ্যে আছে বু, তোবা টেক সিং,তামাশা,ঠাণ্ডা গোস্ত ইত্যাদি।

মান্টো বিরুদ্ধে ছয়বার অশ্লীলতার অভিযোগে মামলা হয়। কিন্তু কখনই তিনি দোষী সাব্যস্ত হননি। তার অধিকাংশ কাজ পৃথিবীর বহুভাষায় অনুদিত হয়েছে। বেঁচে থাকার প্রবল আগ্রহ ব্যাধির কাছে আত্মসমর্পণ করে। ১৯৫৫ সালের ১৮ জানুয়ারি লাহোরে তার অকাল প্রয়াণ ঘটে।



মন্তব্য চালু নেই