এবার প্রকৌশলীকে পেটালেন সাংসদ বদি

এবার উখিয়া-টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির হাতে প্রহৃত হলেন উপজেলা পরিষদের এক সহকারী প্রকৌশলী।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মোস্তফা মিনহাজ বলেন, ‘এমপি বদি অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে করতে তার অফিসে প্রবেশ করেন। একপর্যায়ে কোন কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই তাকে মারধর শুরু করেন।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, বুধবার উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভার দিন নির্ধারিত ছিল। সম্প্রতি কক্সবাজারে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় কোমেনের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে করণীয় নির্ধারণে সভাটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিও উপস্থিত ছিলেন। তিনি সকাল ১০টার দিকে সভায় গিয়ে দেখেন উপজেলা প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকলেও সহকারী প্রকৌশলী মোস্তফা মিনহাজ অনুপস্থিত রয়েছেন। বিষয়টি তিনি তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবহিত করেন এবং সভায় অংশ নিতে কর্মচারীদের দিয়ে সহকারী প্রকৌশলীকে ডাকতে পাঠান। এরপরও প্রকৌশলী সভায় অংশগ্রহণ করতে বিলম্ব করেন।

তিনি বলেন, লোক দিয়ে ডাকতে পাঠানোর পরও সভায় আসতে বিলম্ব করায় সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি ইউএনও হিল্লোল বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে সহকারী প্রকৌশলী মোস্তফা মিনহাজের কার্যালয়ে গিয়ে কারণ জানতে চান। একপর্যায়ে সাংসদ তাকে কঠোর ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে সহকারী প্রকৌশলী সমন্বয় সভায় উপস্থিত নেন।

জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, একজন সংসদ সদস্য হয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার মতো ঘটনা দুঃখজনক। তার বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগ থাকলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানাতে পারতেন।

সভায় অংশগ্রহণকারী পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন বলেন, বুধবার সকাল ১১টার দিকে সাংসদ আব্দুর রহমান বদি সভায় উপস্থিত হয়ে সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়েছেন কি না খোঁজ নেন। একপর্যায়ে সভাস্থল থেকে ইউএনওকে সঙ্গে নিয়ে বের হয়ে যান।

উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তাকে এমপি বদি অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও মারধর করেছেন বলে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে শুনেছি।

এ ব্যাপারে ইউএনও হিল্লোল বিশ্বাসকে কয়েকবার ফোন দিয়ে ও মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে কথা বলার জন্য চেষ্টা করা হয় আব্দুর রহমান বদির সঙ্গে। তিনি কল রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এর আগেও আব্দুর রহমান বদির হাতে শিক্ষক, আইনজীবী, সরকারি কর্মকর্তা, এনজিও কর্মকর্তাসহ অনেককে মারধর করার অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনা নিয়ে তিনি বেশ আলোচিত-সমালোচিতও হয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই