এক দশক ধরেই চলছে উন্নয়নের প্রশংসা

এশিয়ার বাঘ হতে যাচ্ছে ‘বাংলাদেশ’

উন্নয়নের পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার প্রশংসা চলছে গত এক দশক ধরেই। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এক প্রতিবেদন বলছে, অর্থনীতিতে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত যা করেছে, তা কিছুই না। আগামীতে এশিয়াতে বাংলার অর্থনীতি হবে আরও শক্তিশালী, আরও সমৃদ্ধ। তারা বলছে, এশিয়ার বাঘ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

গত এক দশকে গড়ে ছয় শতাংশের থেকে বেশি বার্ষিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি এশিয়াতে উদীয়মান শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বাংলাদেশের এই প্রবৃদ্ধির অন্যতম একটি অংশ এসেছে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক এর তথ্যমতে যা দেশের মোট রপ্তানির আশি শতাংশেরও বেশি। কিন্ত বাংলাদেশ যদি ২০২০ সালের মধ্যে সরকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা আট শতাংশ অর্জন করতে চায় তাহলে তৈরি পোশাক শিল্প নয়, তার পাশাপাশি অন্যান্য খাতেরও সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে। আর বহুমুখী শিল্পের প্রসার ঘটাতে হলে বাংলাদেশকে দুটি বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিনিয়োগের সঠিক পরিবেশ সৃষ্টি করা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, খারাপ অবকাঠামো সারাদেশে পণ্য বহনে বাধার সৃষ্টি করে। এছাড়াও দেশের বিশ শতাংশেরও বেশি মানুষ (প্রায় তিন কোটি দশ লাখ) পাওয়ার গ্রিডের সাথে সংযুক্ত না, এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার সংশয়কে মাথায় রেখে প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রায়ই নিজস্ব জেনারেটর এবং অন্যান্য বিকল্প জ্বালানির উপর নির্ভর করতে হয়। এতে করে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায় বহুগুণ। এ বিষয়গুলোর সঙ্গে যোগ হয় দুর্নীতি। যা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় সবচেয়ে বড় বাধা।

প্রশাসনিক ব্যবস্থায় অতিমাত্রায় দুর্নীতি যুক্ত হয়ে বাংলাদেশকে বিনিয়োগযোগ্য দেশের তালিকার একেবারে শেষ দিকে নিয়ে গেছে। ব্যবসারজন্য অন্যতম কঠিন জায়গায় পরিণত হয়েছে এদেশ। ক্যাপিটাল ইকোনমিক্স এর মতে –‘দুর্নীতি কমানোর জন্য আরো পদক্ষেপ নিতে হবে, শুল্ক বিভাগের কাজকে সহজতর করতে হবে, জমিলাভকে সহজ করতে হবে, বেসরকারি খাতকে উন্নত করতে হবে, ঋণদান সহজ করতে হবে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাস্থিতিশীল করতে হবে।‘

বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যেই বিনিয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে আছে ব্যবসা শুরুর জটিলতা কমিয়ে সাত দিনে আনা যা করতে আগে উনিশ দশমিক পাঁচ দিন লাগত গড়ে। বর্তমানের ২৭৮ দিনের বদলে ৬০ দিনের মধ্যে নির্মাণের অনুমতি দেয়া এবং একটি প্রতিষ্ঠানের জাতীয় পাওয়ার গ্রিডের সাথে সংযুক্ত হওয়ার সময় বর্তমানের ৪০৪ দিন থেকে কমিয়ে ২৮ আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সহজে সম্পত্তি নিবন্ধনের জন্য সরকারের আরো পরিকল্পনা রয়েছে।

চুক্তি বাস্তবায়নে উন্নতি আনা ও কর প্রদানকে ডিজিটাইজ করে সংগ্রহ বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে বাংলাদেশের। এসব ক্ষেত্রে অগ্রগতিহলে এবং পরিকল্পনাগুলো ঠিকঠাক বাস্তবায়িত হলে বিনিয়োগেরআগামী সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশ চলে আসবে উপরের সারিতে। আর বিনিয়োগ ও ব্যবসাবান্ধব হলে খুব দ্রুতই বাংলাদেশ পরিণত হবে এশিয়ার নতুন অর্থনৈতিক শক্তিতে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ভাষায় সত্যি সত্যিই এশিয়ার নতুন বাঘ হয়ে যাবে বাংলাদেশ।



মন্তব্য চালু নেই