‘ওই গ্রিলের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতেন বাবা’

‘রেহানা তোর কি মনে আছে? বাবা ওই গ্রিলের সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলতেন। তখন তুই অনেক ছোট। ওই সব অতীত দিনের কথা তোর মনে থাকার কথা না। ববি দেখ, ওই ছোট্ট কামরাতে রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে থাকতেন তোমার নানা।’

গত শনিবার বিকেলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে এসে বৃষ্টিতে ভিজে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে জেলখানার অতীত স্মৃতিকথা এভাবেই বোন শেখ রেহানা ও তার ছেলের কাছে বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (পুরনো) ভেতরে প্রথমবারের মতো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার দুর্লভ আলোকচিত্র নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ জেল ও বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ‘জার্নি। প্রতিষ্ঠানটির উপদেষ্টা প্রফেসর ইমিরেটাস ড. এ কে এম আব্দুল মোমেন রোববার দুপুরে বোন ও ভাগ্নেকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাগার পরিদর্শন এভাবেই বর্ণনা দেন।

শনিবার (৫ অক্টোবর) দিনটি ছিল বৃষ্টিস্লাত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল ৩টা ২০ মিনিট থেকে ৪টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত কারাগারের ভেতর অবস্থান করেন। কারাগারের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনের সময় কিছুটা ভিজেও যান তিনি। তারপরও বোন রেহানা ও তার ছেলে ববির কাছে বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে পুরনো নানা স্মৃতির বর্ণনা দেন ও ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং দেখান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ড. মোমেন বলেন, জেলখানার বহু ঘটনার ইতিহাস সম্পর্কে জানেন প্রধানমন্ত্রী। ছোটবেলায় মায়ের সঙ্গে দুই বোন এলেও পরবর্তীতে আর কখনো এখানে আসা হয়নি শেখ রেহানার। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে শেখ হাসিনা আগেও জেলখানা পরিদর্শনে এসেছেন। আর তাই বঙ্গবন্ধু যে কক্ষে থাকতেন, যেখানে এসে পরিবারের সদস্য ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতেন। যেখানে জাতীয় চার নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয় সেসব স্থান ঘুরে ঘুরে বোন ও ভাগ্নেকে দেখান শেখ হাসিনা।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী কারাগারের ভেতরে উন্মুক্ত পার্ক ও জাদুঘর নির্মাণসহ নানা স্থাপনার নকশা দেখে কিছু পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের পরামর্শ দেন। বন্দিদের কাছে আমদানি (যেখানে বন্দিদের এনে প্রথমে রাখা হয়) সেলটি যেমন আছে তেমনই রাখার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া জেলখানায় বঙ্গবন্ধুর থাকার কক্ষ ও জাতীয় চার নেতাকে যেখানে হত্যা করা হয় সে কক্ষটিও অক্ষত রাখার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

ড. মোমেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে সংগ্রামী জীবনগাথা প্রদর্শনীটি কেমন লেগেছে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী হেসে বলেন, আমাদের সারাজীবনই তো সংগ্রামের। এ সময় প্রদর্শনীটি আয়োজনের জন্য কারা অধিদফতর ও আয়োজক প্রতিষ্ঠান জার্নিকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই