ওষুধের বিকল্প হিসাবে কাজ করবে যে ব্যাটারি

আমেরিকার কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বানিয়েছেন একটি ভক্ষণযোগ্য ব্যাটারি। এটি গিলে ফেলার পর দেহের অভ্যন্তরে থেকে চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট নানা কাজ করবে। দেহে স্থাপিত চিকিৎসা যন্ত্র চালাতে সহায়তা করতে পারে এ ব্যাটারি। বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার কাজ করতে পারে ব্যাটারিটি।

বিশেষজ্ঞরা জানান, এ ব্যাটারি বানানো হয়েছে একেবারে প্রাকৃতিক উপকরণ দিয়ে। ইতিমধ্যে প্রোটোটাইপ ব্যাটারি বানানো হয়েছে। এটি ৫ মিলিওয়াটের কোনো যন্ত্রকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত শক্তি সরবরাহ করতে পারে। এই শক্তি অন্ত্রের ব্যকটেরিয়ার পরিবর্তনে প্রয়োজনে ওষুধ সরবরাহের জন্য যথেষ্ট। আবার প্রয়োজনে ভ্যাক্সিন প্রয়োগ করতে পারবে তা। এর সঙ্গে ওষুধ দেওয়া থাকলে তা সময়মতো প্রয়োগ করবে ব্যাটারি।

গবেষক প্রফেসর ক্রিস্টোফার বেটিংগার জানান, দেহের তেল থেকে তৈরি হয়েছে এটি। ফলে তা কোনভাবেই ক্ষতিকর নয়। বহু যুগ ধরে চিকিৎসাবিজ্ঞান

এমন ইলেকট্রনিক যন্ত্র বানানোর জন্য গবেষণা করে আসছে যা খাওয়া যাবে এবং চিকিৎসার নানা কাজে লাগবে। এমনিতেই চিকিৎসার কাজে যেসব ব্যাটারি ব্যবহার করা হয় তা অনেক শক্তিশালী ও বড় আকারের। পেসমেকারের মতো ব্যাটারিগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলো দেহে এক ধরনের বিষ উৎপন্ন করে। রোগ নিরাময়ে যদি প্রতিদিন দেহে যন্ত্র বহন করতে হয় তবে তা নিরাপদ হতে হবে। বিষক্রিয়ার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এটি বানানোর উপাদান এমন হতে হবে যা গ্রহণ করে নেয় দেহ। এ ধরনের কাজে এমন ডিভাইস দরকার যা গলধঃকরণ হবে এবং দেহে বিচরণ করবে এবং এক সময় নিরাপদে বেরিয়ে যাবে। যে ব্যাটারি তৈরি করা হয়েছে তা দেহে অন্তত ২০ ঘণ্টা অবস্থান করে তার কাজ শেষে আবার বেরিয়ে যাবে।
ত্বকে রয়েছে মেলানিন নামের উপাদান। এই উপাদান সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি শোষণ করে আমাদের নিরাপত্তা দেয়। এই মেলানিন আবার ধাতব আয়নে যুক্ত হয় কিংবা ছিন্ন করে। আর এমনটাই ঘটে ব্যাটারিতে। মেলানিন থেকে পিগমেন্ট নিয়ে তাদের পজিটিভ এবং নেগেটিভ অংশ হিসাবে ব্যবহার করেছেন বিজ্ঞানীরা। দেহের কপার এবং আয়রন ব্যবহার করা হয়েছে ব্যাটারি তৈরির কাজে। তিন ধরনের ব্যাটারিতে এদের প্রয়োগ করা হয়েছে।

আরেক গবেষক ড. হাং-আহ পার্ক জানান, এই পদ্ধতিতে যে ব্যাটারি বানানো হয়েছে তা বেশ কাজ করে। এদের কার্যক্ষমতা নির্ভর করে কতটা শক্তি দিয়ে বানানো হয়েছে তার ওপর। তবে উদাহারণস্বরূপ বলা যায়, এমন একটি ব্যাটারি দিয়ে ৫ মিলিওয়াটের একটি যন্ত্র ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত চালানো যাবে। আর এ ব্যাটারি তৈরিতে ৬০০ মিলিগ্রাম সক্রিয় মেলানিন ব্যবহার করা হয়েছে ক্যাথোড হিসাবে।

এখন গবেষকরা পেকটিনসমৃদ্ধ ভক্ষণযোগ্য ব্যাটারি বানানোর চেষ্টা করছেন। পেকটিন এক ধরনের জেল যা জ্যাম তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। পাকস্থলীতে থেকে কাজ করে যায় এমন ব্যাটারি বানানোর কথাও চিন্তা করছেন তারা। -কলকাতা২৪



মন্তব্য চালু নেই