‘ও যেদিন খেলা ছাড়বে, আমার মনের অবস্থা যে কী হবে’

গোলাম মুর্তজা; সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার বাবা; নি:সন্দেহে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল অধিনায়কের বাবা। ছেলের সাথে এখনও তিনি থাকেন ছায়ার মত।

মানুষ কিংবা একজন ক্রিকেটার হিসেবে মাশরাফি কেমন সেটা তার চেয়ে ভাল কেউ জানেন না। দৈনিক প্রথম আলোকে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে মাশরাফির জীবন ও ক্যারিয়ারের নানা দিক।

জানালেন ছোটবেলা থেকে ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারের প্রতিটি মুহূর্তেই আছেন ছেলের পাশে। যেদিন মাশরাফির ক্যারিয়ারের ইতি ঘটবে সেদিনের কথা মনে হলেই বুক হুঁহু করে উঠে তার। বললেন, ‘আমি সব সময়ই ওর সঙ্গে আছি। একদম অনূর্ধ্ব-১৭ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত। ও যেদিন খেলা ছাড়বে, আমার মনের অবস্থা যে কী হবে…জানি একদিন ছাড়তেই হবে। তবুও ভাবতেই কষ্ট লাগে। যা-ই হোক, আমার চিত্ত খুব একটা দুর্বল নয়। ভীষণ বাস্তববাদী আমি। ওর খেলা নিয়মিতই দেখি। খেলতে গেলে টেনশন থাকবেই। টেনশনকে সহনীয় পর্যায়ে রাখার ক্ষমতা আমার আছে।’

বাবা-ছেলের সম্পর্কের মাঝেও আছে বন্ধুত্ব। সুযোগ পেলেই পরিবার নিয়ে বেড়িয়ে পরেন তারা। গোলাম মুর্তজা বললেন, ‘সুযোগ পেলেই আমরা ঘোরাঘুরি করি। এই তো গত এপ্রিলে পরিবারের সবাই মিলে কাশ্মীরে ঘুরে এলাম। অনেক মজা হলো। জীবনটাকে সুন্দর-সাবলীলভাবে উপভোগ করতে চাই আমরা।’

মাশরাফির ভাল সময় যেমন তিনি দেখেছেন, তেমনি ইনজুরি জর্জরিত মাশরাফিকেও দেখেছেন তিনি। কিভাবে মাশরাফি বাজে সময়ের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেন? – এমন এক প্রশ্নের জবাবে মাশরাফির বাবা বললেন, ‘ওর চোট ও পুনর্বাসনের সময়টা যে কী কষ্টকর বলে বোঝাতে পারব না। এটা সাধারণভাবে ব্যাখ্যা দেওয়াও কঠিন। ক্যারিয়ারের খুব ভালো পর্যায়ে থেকে হঠাৎ এমন পরিস্থিতি যে পড়ে, তারই বা কী হয় আর আমাদের কী হয়—ভাবতে গেলে গা শিউরে ওঠে! ও তো চঞ্চল প্রকৃতির, এক জায়গায় বসে থাকার মানুষ নয়। আনন্দ-মজা করতে বেশি ভালোবাসে। অথচ তাকে ২৪ ঘণ্টা শুয়ে থাকতে হয়েছে বিছানায়। সবার ভালোবাসা, পরিবারের সবার সমর্থন আর অদম্য মনোবলেই কঠিন সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পেরেছে সে।’

এই অদম্য মনোবলই তো মাশরাফির সবচেয়ে বড় সম্পদ!



মন্তব্য চালু নেই