ককটেল বিস্ফোরণ ও মুখোমুখি সংঘর্ষে পণ্ড হয়ে গেল নোয়াখালী বিএনপির সম্মেলন

ককটেল বিস্ফোরণ ও মুখোমুখি সংঘর্ষে পন্ড হয়ে গেল নোয়াখালী বিএনপির সম্মেলন, আহত ২৫ দুই সভাপতি প্রার্থীর সমর্থকদের মুখোমুখি সংঘর্ষে পন্ড হয়ে গেল নোয়াখালী জেলা বিএনপির সম্মেলন।শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বক্তব্য চলাকালে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত। মুহুর্তের মধ্যে সংঘর্ষ একাডেমির বাহিরের ও নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে ছড়িয়ে পড়লে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে কেন্দ্রীয় নেতারা। এসময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা মুহুর্মুহ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে, একাডেমির ভিতরের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর ও সড়কের পার্শ্বে নেতাদের টানানো ব্যানার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। এসময় আশপাশের এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে অন্তত ২৫জন আহত হয়। আহতরা হচ্ছেন, পৌর ছাত্রদলের সভাপতি মিজানুর রহমান, নোয়াখালী সরকারি কলেজ ছাত্র দলের আকবর হোসেন, আজমির, রুবেল, শামু, রানা, পাবেল, শরিফ ও জাবেদসহ ২৫জন। আহতরা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালসহ প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রায় সাত বছর পর আজ বিকালে জেলা বিএনপির সম্মেলন শুরু হয় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা উৎসাহ-উদ্দিপনা নিয়ে সম্মেলন স্থলে হাজির হয়। সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য শেষ করলে বিকাল ৫টার দিকে প্রধান অতিথির বক্তব্য শুরু করেন মওদুদ আহমদে। এসময় হঠাৎ করে শিল্পকলার হলরুমের বাহিরের জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি প্রার্থী হারুনুর রশিদ আজাদের কয়েকজন সমর্থক অপর সভাপতি প্রার্থী মাহাবুব আলমগীর আলোর সমর্থকদের সাথে বিতন্ডায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে হারুন সমর্থকরা আলো সমর্থক ও নোয়াখালী পৌর ছাত্রদলের সভাপতি মিজানুর রহমানের মাথায় আঘাত করে। মুহুর্তেই উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এক পর্যায়ে একটি গ্রুপ হলরুমের পিছনের বন্ধ দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে চেয়ার ভাঙচুর করে। পরে সম্মেলনের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান মাইকে হামলাকারীদের শান্ত হওয়ার নির্দেশ দিলেও তারা শোনেননি। এ সময় হামলাকারীরা কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের সামনের টেবিলও ভাঙচুর করে। সূত্র জানায়, এক পর্যায়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে শিল্পকলার বাহিরের সড়ক ও নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে। এসময় সংঘর্ষে লিপ্ত উভয় পক্ষের সমর্থকরা মুহুর্মুহ অর্ধশতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং দুই সড়কের পাশের নেতাকর্মীদের টানানো বেনার- ফেস্টুন-পোস্টার ছিড়ে পেলে। বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী চলে এ সংঘর্ষ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এবিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি প্রার্থী হারুনুর রশিদ আজাদ তার সমর্থকদের হামলার কথা অস্বীকার করে বলেন, তাঁকে যারা সভাপতি হিসেবে দেখতে চায় না তারাই এ হামলা ছালিয়েছে। অপর সভাপতি প্রার্থী মাহাবুব আলমগীর আলোর সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁর সেলফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শিল্পকলা একাডেমিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। তিনি বলেন, বিএনপি দেশের একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক দল। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কিছুটা গোলযোগ হয়েছে। তাই দ্বীতিয় পর্যায়ের কাউন্সিল অধিবেশন স্থগিত করা হয়েছে। শীঘ্রই কাউন্সিল অধিবেশন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি। অপরদিকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে কাউন্সিল অধিবেশন স্থগিত করায় এবং হামলার প্রতিবাদে সভাপতি প্রার্থী মাহাবুব আলমগীর আলোর সমর্থকরা জেলা শহর মাইজদীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহ্জাহানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্ল্যাহ বুলুর সহধর্মীনি লাকি বেগম। সম্মেলনে পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ আজাদ।এই দিকে সুধারাম থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে শহরের অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই