কক্সবাজারের উখিয়ায় ৫ হাজার একর জমিতে রাবার ড্যাম ও বোরো চাষের সম্ভাবনা

অংশগ্রহণমূলক ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ সেক্টর প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজারের উখিয়ার দোছরী-হরিণমারা রাবার ড্যাম বাস্তবায়নের কাজ সম্পন্ন হলে রাজাপালং ও পালংখালী ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার একর জমিতে বোরো চাষ সম্ভব। পাশাপাশি কৃষিজাত পণ্য ও অর্থকরী ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে এলাকার কৃষি নির্ভরশীল হত দরিদ্র পরিবারগুলোর আর্থসামাজিক উন্নয়নের অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাবার ড্যামের উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন শেষে কক্সবাজার এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী এবি ছিদ্দিক স্থানীয়দের আশ্ব্স্থ করে বলেন, এ রাবার ড্যাম প্রকল্পের আওতায় ব্রিজ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে।
নির্মাণাধীন রাবার ড্যাম এলাকায় বসবাসরত লোকজন জানায়, হরিণমারা, হারাশিয়া, খয়রাতি, রাজাপালং, মধ্য রাজাপালং, খালকুল পাড়া, হিন্দু পাড়া, হাজিরপাড়া, দোছরী, মালিয়ারকুল, মাছকারিয়া, মধুরছড়া, কুতুপালং, লম্বাশিয়া ও পালংখালী ইউনিয়নের আংশিক সহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ৫ হাজারেরও অধিক অনাবাদী জমিতে বোরো চাষ করা সম্ভব হবে। খয়রাতি পাড়া গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ আলী, সোনা মিয়া ও এজার নবী সহ বেশ কয়েক জন কৃষক জানায়, শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকটের কারণে খালের দুই পাড়ে অসংখ্য জমিজমা যুগ যুগ ধরে অনাবাদী পড়ে থাকাতে এখানকার অধিকাংশ কৃষক একফসলী অর্থাৎ আমন চাষের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। তারা বলেন, এ রাবার ড্যামটি বাস্তবায়ন হলে বোরো উৎপাদনের পাশাপাশি শাকসবজি সহ যাবতীয় কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
হরিণমারা-দোছরী রাবার ড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইউ,পি, সদস্য নুরুল কবির জানান, বিশেষ করে খালের উপর দীর্ঘ দিন আগে নির্মিত ব্রিজটির মেয়াদকাল শেষ হওয়ার কারণে এটি যে কোন সময়ে ধ্বসে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার অবনতি হতে পারে। নতুন করে একটি ব্রিজ নির্মাণের উদ্বেগ গ্রহণ করায় এ খালের উপর রাবার ড্যাম বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। এতে একদিকে যোগাযোগ ও অন্যদিকে কৃষি বিপ্লবের অফুরন্ত সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। রাবার বাস্তবায়নে নিয়োজিত ঠিকাদার মেসার্স আবুল বশর জানান, গুণগত মানসম্পন্ন নির্মাণ সামগ্রী ও টেকসই নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে গিয়ে তার অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্ধ ধরা হলেও, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিজমা রাবার ড্যাম কাজে ব্যবহৃত হওয়ায় জমির মালিকেরা ক্ষতিপূরণ দাবী করছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী এমএ ছিদ্দিক জানান, রাবার ড্যামের অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহনে প্রকৌশল অধিদপ্তর সব ধরনের সহযোগীতা করবে।

উখিয়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৩২ জনকে আসামী করে থানায় মামলা
উখিয়ার বালুখালী পানবাজার এলাকায় আধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্র“পের সংঘর্ষের ঘটনায় রোববার রাতে থানায় পৃথক পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ৩২ জনকে আসামী করা হয়েছে। ঘটনার পরও বালখালীতে ভুট্টো বাহিনীর অস্ত্রের মহড়া অব্যাহত থাকলেও পুলিশ কোন আসামীকে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
জানা গেছে, শনিবার রাতে এ উপজেলার বালুখালী পানবাজার এলাকায় দুই পক্ষের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ২০ জন আহত হয়। রোববার রাতে বালুখালী গ্রামের হাজী আব্দুল মজিদের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ফজল কাদের ভুট্টোকে প্রধান আসামী করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করলে বালুখালীর পানবাজার এলাকায় ভুট্টো বাহিনীর ক্যাডারেরা ক্ষিপ্ত হয়ে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে যাচ্ছে। থানা সূত্রে জানা গেছে, অপর পক্ষের ফজল কাদের ভট্টো বাদী হয়ে বখতিয়ার আহম্মদকে প্রধান আসামী করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ সব ঘটনার জের ধরে বালুখালীর পানবাজার এলাকায় সাধারন মানুষের মাঝে বিরাজ করছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। দুই পক্ষ থানায় মামলা করায় এলাকার সাধারন লোকজন রাত এলেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে পুলিশের গ্রেপ্তার আতংকে। উখিয়া থানার ওসি মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় দুইটি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই