কক্সবাজার সদরের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

মোঃ আমান উল্লাহ, কক্সবাজার : প্রবল বর্ষনে ও আমাবশ্যার জোয়ারে কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে উপকুলবর্তী বৃহত্তর গোমাতলীর ১০ হাজার মানুষ। অমাবস্যার জোয়ারে সাগরের পানিতে এ ইউনিয়নের গোমাতলীর ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে ৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এ ইউনিয়নে প্রায় ১০হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়েছে। এ ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ডে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী সাবিবুর রহমান জানায়, বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্কারের জন্য সার্ভে করা হয়েছে। প্রায় কোটি টাকা বাঁধ সংস্কারের জন্য সরকার বরাদ্ধ দিয়েছেন। গত এক সপ্তাহ আগে থেকে ইউনিয়নের ৫ টিরও অধিক প্রাম পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। গেল ঘুর্নিঝড় রোয়ানুর আঘাতে গোমাতলীর পাউবো নিয়ন্ত্রিত ১২ কি. বেড়িবাঁধ বিলিন হয়েছে। ওই অংশ দিয়ে সাগরের জোয়ারের পানি সরাসরি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে করে ওই ইউনিয়নের বিপুল এলাকা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়েছে। অধিকাংশ বাড়িঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। রাস্তাঘাট পানির নিচে থাকায় এসব এলাকার যাতায়ত বন্ধ রয়েছে। পানি বন্দি মানুষ নৌকা নিয়ে চলাচল করছে।

ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ডে গত এক সপ্তাহ ধরে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বাড়িঘর লোনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ঘরে চুলা আগুন জ্বলছেনা। নলকুপ পানির নিচে ডুবে রয়েছে। ক্ষুর্ধাত মানুষ ও পরিবারের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রচন্ড লবনাক্ততার কারনে এ ইউনিয়নের বিপুল অংশে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এমন কোন পুকুর নেই যেগুলোতে লবনাক্ত পানি ঢুকে পড়েনি। পয়নিস্কাশন ও দৈনন্দিন কার্যক্রমে গৃহস্থলি কাজে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে।

ঘুর্নিঝড় রোয়ানুর আঘাতে ইউনিয়নের মহেশখালী চ্যানেল সংশ্লিষ্ট পাউবোর বেড়িবাঁধ বিলিন হয়। চৌফলদন্ডি স্লুইস গেইট, পোকখালী স্লুইস গেইট ও উত্তর গোমাতলী মোহাজের ঘোনা এ ব্লক, ডি ব্লক ও সি ব্লক প্রজেক্ট পর্যন্ত প্রায় ২ কি.বেড়িবাঁধ জোয়ারের পানির তোড়ে বিধ্বস্থ হয়। এরপর থেকে প্রতিনিয়ত পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। পশ্চিম গোমাতলী চরপাড়া অংশের একাধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ বিলিন হয়েছে। বর্তমানে গোমাতলীর অন্তত ৫টির অধিক প্রামে নিয়মিত জোয়ার-ভাটা চলছে।

গতকাল সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ৩টি ওয়ার্ড় পুরো পানিতে ডুবে আছে। গোমাতলী উচ্চ বিদ্যালয়, বারডইল্যা পাড়া, চর পাড়া, বদরখালী পাড়া, উত্তর গোমাতলী বিদ্যালয়, গাইট্যাখালী, রাজঘাট ও পশ্চিম গোমাতলীর সড়কের উপরে প্রায় ২-৩ ফুট পানি হয়েছে। দুপুরের জোয়ারের পানিতে এসব এলাকা সয়লাব হয়েছে।

সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম রহিম উল্লাহ জানায়, গোমাতলীর অবস্থা খুবই বিপর্যস্থ। মানুষ বাঁচাতে হলে বেড়িবাঁধ অতি দ্রুত সংস্কার করতে হবে।



মন্তব্য চালু নেই