কটনবাডও আপনার মৃত্যুর কারণ হতে পারে!

সিগারেটের মতো কটন বাডের বক্সেও সতর্কতামূলক বাণী লেখা এখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।কটনবাড দিয়ে কান পরিষ্কারের অভ্যাস অনেকেরই থাকে। কটন বাড ব্যবহার আবার অনেকের কাছে নেশা হয়ে যায়। কারণে-অকারণে কানের ভিতরে কটনবাড না দিলে কিছুতেই যেন শান্তি মেলে না। কিন্তু আমরা অনেকেই হয়তো জানি না, কটন বাডের ব্যবহার কানের জন্য কতবড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।

কটনবাডের ব্যবহারে কানের ক্ষতি তো হয়ই, এমনকি এটার মাত্রাতিরিক্ত ব্যাবহার আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, কটনবাডের ব্যবহারে কানের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। কানের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে স্থায়ীভাবে বধির হয়ে যেতে পারেন আপনি। আমেরিকাতে যত মানুষ কানের সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে আসেন তাদের অধিকাংশের ক্ষেত্রে দেখা গেছে কটনবাডের ব্যবহারজনিত জটিলতার কারণেই তাদের কানে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

আমেরিকা, কানাডা ও ব্রিটেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে কটনবাডের প্যাকেটের ওপরে সতর্কতামূলক বাণী লেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আমেরিকায় ৪০ বছর বয়সী এক অদিবাসী ড্যানিয়েল সেলট মারা যান। মৃত্যুর কারণ হিসেবে দেখা গেছে, তার বহিঃকর্ণের ইনফেকশন ছিলো, যা কানের পর্দা ছিদ্র করে মেনিনজাইটিস সৃষ্টি করেছে। প্রতিদিন বারবার কটন বাড ‌ব্যবহারের ফলে তার বহিঃকর্ণে ইনফেকশন হয় এবং পরে তিনি আরও বেশি কটন বাড ব্যবহার করাতে তার বহিঃকর্ণের ইনফেকশন মধ্যকর্ণ থেকে অন্তঃকর্ণে বিস্তৃতি লাভ করে।

ডাক্তাররা তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে মাত্রাতিরিক্ত কটনবাডের ব্যবহারকেই উল্লেখ করেছেন। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কটনবাড প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, কটনবাডের ব্যবহার শত বছর ধরে চলে আসছে। আমরা শিশুদের কানের যত্ন নেয়ার জন্য ৭০-এর দশক থেকে এটা প্রস্তুত করছি তবে প্রাপ্তবয়ষ্কদের মাঝে এটার মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার শুরু হয়েছে। এখন সময় এসেছে এটা নিয়ে ভেবে দেখার।

বেশিমাত্রায় কানের ভিতরে বার্ডস ঢুকালে আপনারও এই বিপদটা হতে পারে। যেমনটা হয়েছে নাগপুরের এক ব্যক্তির।

রোজকার অভ্যেসমতো কটনবাড দিয়ে কান পরিষ্কার করছিলেন তিনি। বেশ খানিকটা ভিতরেই ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন বাডটা। এরপর যখন তিনি বাডটা বের করেন, তখন বাডের তুলোর বলটা থেকে যায় কানের ভিতরেই। কিন্তু, সেটা নজর এড়িয়ে যায় তার। এরপর দিনপাঁচেক কাটতেই কানে অসহ্য ব্যথা। অগত্যা ডাক্তারের কাছে ছোটেন তিনি। ডাক্তার পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেন, তুলোর বলটা রয়ে গেছে কানের ভিতরেই। কানের ভিতরের চুল জড়িয়ে, পুঁজ হয়ে একাকার কাণ্ড। এরপর ওই চিকিত্সক অটো অ্যান্ডোস্কপি করে বের করেন সেই তুলোর বল।



মন্তব্য চালু নেই