কন্যা সন্তান হওয়ায় বউকে তালাক দিলেন স্বামী!

মেয়ে হওয়ায় স্ত্রীকে ডিভোর্স দিলেন স্বামী। এটি কোনো গ্রামের নিরক্ষর পরিবারের ঘটনা নয়। এই ঘটনা ভারতের বেঙ্গালুরেুর এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের।

লজ্জাজনক এই ঘটনা বেঙ্গালুরেুর জয়নগরের। ৬ বছর প্রেম চলার পর একটি আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি কম্পানির সফটওয়্যার ডেভলপার ২৯ বছরের সিন্ধুর (নাম পরিবর্তিত) ২০০৯ সালে বিয়ে হয় ৩০ বছরের টেকি বিপিনের (নাম পরিবর্তিত) সঙ্গে। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। তবে, সিন্ধু অন্তঃসত্ত্বা হতেই পুত্র সন্তানের আশায় দিন গুনতে শুরু করেন বিপিন ও তার পরিবার। সদ্যোজাত পুত্র সন্তানকে স্বাগত জানাতে কনকাভিষেকম অনুষ্ঠানের আয়োজনও করে ফেলেন বিপিনের ঠাকুমা। সিন্ধু যাতে পুত্র সন্তানেরই জন্ম দেন, সেজন্য নাকি তাকে হুমকি দেয়াও শুরু হয়।

মানসিক এই চাপ সহ্য করতে না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন সিন্ধু। ২০১৩ সালের জুলাই মাসে তিনি একটি প্রিম্যাচিওর কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। খবরটা পেয়ে মেয়ের মুখটা পর্যন্ত দেখেননি বিপিন। রাগে হাসপাতালে স্ত্রী-কন্যাকে ফেলে রেখেই তিনি চলে যান। দু’দিন পর মেয়েকে নিয়ে সিন্ধু বাপের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পর সেখানেও তাকে দেখতে যাননি তার স্বামী।

এ ব্যাপারে সিন্ধু বলেন, ‘আমার মনটা ভেঙে যাওয়ার পাশাপাশি ভীষণ রেগেও গিয়েছিলাম। মেয়ে হওয়ার দু মাস পর আমি জানতে পারি, বিপিন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে। ওকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে গেলে তখনো ও আমাদের মেয়েকে মেনে নিতে চায়নি। তার মাসখানেকের মধ্যেই ও আমাকে ডিভোর্সের নোটিশ পাঠায়।’

সম্প্রতি বিপিনের দিক থেকে মেয়ের পড়াশোনার খরচ চেয়ে সিন্ধু পিটিশন দাখিল করলে, তাও দিতে অস্বীকার করেন বিপিন। তার অজুহাত ছিল, মেয়ের সঙ্গে তাকে দেখাই করতে দেন না সিন্ধু। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে সিন্ধু বলেছেন, ‘যে বাবা তার মেয়ের মুখ দেখতেই চান না, তার মুখে এসব মানায় না।’ আদালত অনুমতি দিলেও দু-তিনবারের বেশি মেয়ের সঙ্গে দেখা করেননি বিপিন। তাও মিনিট ১০-এর জন্য।

এখন মেয়েকে নিজের চেষ্টায় বড় করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন সিন্ধু। ফের কাজে যোগ দিয়েছেন তিনি। মেয়েকে মানুষের মতো মানুষ করতে চান তিনি। সূত্র : টাইমস অফ ইন্ডিয়া



মন্তব্য চালু নেই