কপালে টাক, কিছু নিয়মে গজাবে নতুন চুল!

চুল আমাদের সৌন্দর্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু হঠাৎ চুল পড়া বেড়ে গেলে আমরা হতাশায় পড়ে যাই। নারী-পুরুষ উভয়েই এ চুল পড়া সমস্যায় ভোগেন। সমস্যা থাকলে তার সমাধানও আছে।

মাথায় অকালে চুল পড়ে টাক হওয়া বা চুল পাকা প্রায় একই কারণে হয়ে থাকে। অল্প বয়সী ছেলেদের মধ্যেও টাক পড়ার প্রবণতা দেখা যায়।

টাক পড়াকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেশিয়া বলা যায়, যা শুরু হয় কপালের দুই পাশে রগের কাছ থেকে। তারপর ক্রমেই বাড়তে থাকে মাথার সামনের দিকে এবং এটা আস্তে আস্তে পেছনের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। তখন আপনার পুরো মাথার চুল পড়ে যায়।

বংশগত বা হরমোনজনিত কারণে এটি হতে পারে। আবার বয়ঃসন্ধিকাল থেকেই কারও কারও টাক পড়া শুরু হয়ে যায়।

চিকিৎসকদের মতে, অল্প বয়সে চুল পড়ার জন্য অনেকাংশে দায়ী থাইরয়েড গ্রন্থির অসুখ। রক্তস্বল্পতা, ওজন কমানোর জন্য খাওয়া-দাওয়া একদম কমিয়ে দেয়াও চুল পড়ার কারণ হতে পারে।

সুষম খাবারের বদলে অতিরিক্ত ফাস্টফুড, চকলেট ইত্যাদি খেলে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি হয়েও চুল পড়ে যেতে পারে।

ছেলেদের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাকব্রাশ করে চুল আঁচড়ালে সাধারণত কপাল চওড়া হয়ে থাকে। ব্যাকব্রাশ করার কারণে অনেকের মাথায় টাক পড়তেও দেখা যায়।
অনেক লোকেরই কপালটা বেশ বড় হয়। সামনের দিকে চুল ফেলে নতুন রকমের কাট করে অনেকেই চেষ্টা করেন সেটা লুকোতে। কিন্তু এর কোনোটাই তেমন কাজ করে না। পরে দৌড়াতে হয় চিকিৎসকের বাড়ি।

এ ব্যপারে চিকিৎসকের কাছে চুলের ট্রিটমেন্ট করে কেন টাকা নষ্ট করবেন? যদি এ সমস্যা সমাধান আপনার ঘরেই থাকে!

নিখুঁত চেহারা ও অল্প টাক পড়া বড় কপাল ঢাকতে ঘরোয়া কিছু উপায় আছে। ওই উপায়গুলো চেষ্টা করে দেখতে পারেন। এতে আপনার নতুন চুল গজাবে এবং টাক পড়া জায়গা সহজেই ঢাকা পড়বে। আসুন জেনে নিই সেই ঘরোয়া উপায় কী?

গরম তেলে ম্যাসাজ : গরম তেলের ম্যাসাজ খুবই আরামদায়ক। তেলের ম্যাসাজ চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক এবং চুলকে শক্ত রাখে ও পুষ্টি দেয়। আপনার পছন্দের যে কোনো তেল (নারকেল তেল, আলমন্ড তেল ও ল্যাভেন্ডার ওয়েল) গরম করে আপনি কপালে ম্যাসাজ করতে পারেন। এটা খুব আরামদায়ক এবং চুল গজাতে সহায়ক।

ক্যাস্টর ওয়েল : আপনি ক্যাস্টর ওয়েলও ব্যবহার করতে পারেন। এটি একটি অন্যতম সেরা তেল যাতে চুল গজানোয় সহায়ক। কপাল ও যেখানে কম চুল আছে সেখানে লাগান, এবং স্নানের আগে অন্তত এক ঘন্টা রাখুন। তবে খেয়াল রাখবেন যেন বেশি লাগাবেন না, কারণ এতে ত্বকে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

এছাড়া বিভিন্ন ঘরে তৈরি প্যাকও ব্যবহার করা যায়। যেমন :

প্যাক (১): আপনি সমপরিমাণ আমলা, সিকাকাই, ব্রাহ্মী ও দই একসঙ্গে বেটে মিশিয়ে ঘরোয়া প্যাক তৈরি করুন। এটা কপালে বা যেখানে চুল গজাতে চান সেখানে লাগান। আধা ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন।

প্যাক (২): হেনার পাতা, কারি পাতা, জবা পাতা ও মেথি এক সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করুন।

প্যাক (৩) : ব্রাহ্মী শাক শুধু স্মরণশক্তি বাড়ায় না, চুলের জন্যও খুব ভালো। ব্রাহ্মী গুঁড়ো মেশান দই-এর সঙ্গে। এটি কপালে বা যেখানে চুল গজাতে চান, লাগান। ৩০ মিনিট রেখে হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন।

এ ব্যপারে কিছু পরামর্শ

* চুল কখনও টেনে জোর করে ঝুঁটি বা খোঁপা বাঁধবেন না। পিছনের দিকে টেনে কোনো চুল সজ্জা এড়িয়ে চলবেন। এতে কপালটা আরও বড় দেখায়। তাছাড়াও টেনে বাঁধা চুল, চুলের গোড়া আরও দুর্বল করে দেয়।

* ঘরোয়া টোটকা কাজ করতে সময় লাগে। এরমধ্যে আপনি নতুন ধরণের চুলের কাটও করে দেখতে পারেন। সুন্দর করে চুল কাটুন যাতে আপনার কপালটা ঢাকা পড়ে।

এছাড়া এ সব পদ্ধতি ছাড়াও আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে খাবার দিকেও। যেমন ধরুন লোহা সমৃদ্ধ খাবার চুল বাড়তে সাহায্য করে এবং চুল পড়া রোধ করে। দরকারি ভিটামিনের অভাব, উশৃঙ্খল জীবনযাত্রা ও চুলের যথাযোগ্য দেখাশোনা না করায় আপনার চুল ঝড়ে যায় ও টাক পড়ে। স্ট্রেসও একটা বড় কারণ চুল পড়ার, তাই চেষ্টা করুন যতটা পারেন স্ট্রেস নিজের জীবন থেকে দূরে রাখাতে। তাই এভাবে চুলের খেয়াল রাখুন, ভাল খান ও সুন্দর জীবনযাপন করুন।



মন্তব্য চালু নেই