কর্ণফুলী নদীর তীরে দুই হাজার স্থাপনা সরানোর নির্দেশ

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীর দখল করে গড়ে তোলা সরকারি-বেসরকারি দুই হাজারেরও বেশি স্থাপনা সরানোর আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আদেশ বাস্তবায়নে সাতটি নির্দেশনাও দিয়েছে আদালত।

এ সংক্রান্ত একটি রুলের শুনানি শেষে মঙ্গলবার দুপুরে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি কাশেফা হোসেনের বেঞ্চ এই রায় দেয়।

গত সপ্তাহে এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয় আজ সকালে। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক।

মনজিল মোরশেদ বলেন, কর্ণফুলীর তীরে অবস্থিত দুই হাজার ১৮১টি প্রতিষ্ঠান সরানোর জন্য সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছে আদালত।

নির্দেশনার মধ্যে আছে ৯০ দিনের মধ্যে স্থাপনা সরিয়ে নিতে স্থানীয় দুইটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ; তারা নির্দেশ অনুযায়ী কাজ না করলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে এসব স্থাপনা অপসারণ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল।

তবে হাইকোর্ট নৌবাহিনীর তিনটি ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তিনটি প্রতিষ্ঠানকে উচ্ছেদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তবে এ ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে পরিবেশ অধিদপ্তরে কাছ থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিতে হবে। আদালত পরিবেশ অধিদপ্তরকে বলেছে, এসব প্রতিষ্ঠানের আবেদন জনস্বার্থে হলে তাদের এ আবেদন যেন বিবেচনা করে।

কর্ণফুলী নদী সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে মনজিল মোরসেদ। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই হাইকোর্ট কর্ণফুলী নদী সংরক্ষণ এবং নদী দখল করে গড়ে উঠা স্থাপনা অপসারণের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- এই মর্মে রুল জারি করে। নদী তীর দখল করে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনার তালিখা আদালতে দাখিল করতেও তখন জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়।

হাইকোর্টের নির্দেশের পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা ও স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখা এবং দূষণ রোধে নদীর ডান তীরবর্তী (দুইপ্রান্ত) এলাকা সীমানা তৈরি করা হয়। এছাড়া কমিটি বি এস এবং আর এস জরিপের ম্যাপ অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর অবস্থান, নদীর অংশে ভরাট করা জমি ও দখলদারদের অবস্থান আলাদা রঙ দ্বারা চিহ্নিত করে। গত বছরের ৮ নভেম্বর জেলা প্রশাসনের ওই তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। এরপর ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি হলো।



মন্তব্য চালু নেই