কলারোয়ায় পোনা মাছ চাষীরা হতাশায় ভুগছেন

অতি বর্ষণ,প্রযোজনীয় মূলধনের অভাব, ব্যাংক ঋন পেতে জটিলতা সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারনে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়ার ব্রজবাকসা এলাকার পোনা মাছ চাষীরা হতাশায় ভুগছেন।

এলাকার একাধিক পোনা মাছ চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ব্রজবাকসা বাজারে গত ৭০ বছর যাবৎ বিভিন্ন ধরনের মাছের পোনা বিক্রি হয়ে আসছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মাছ ব্যবসায়ীরা মাছের পোন কিনতে আসেন এ বাজারে। ইতো পূর্বে পোনা মাছের চাষ ও ব্যবসা করে এলাকার অনেকে তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। কিন্তু বর্তমানে এলাকায় আগের সেই অবস্থা আর নেই। প্রতি বছর অনবৃষ্টি , অতি বৃষ্টি ,ব্যাংক লোন পেতে হয়রানী,পুকুর লীজের টাকার পরিমান বৃর্দ্ধি সহ নানাবিধ কারনে পোনা মাছের চাষ ও ব্যবসার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।

ঐ এলাকার প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার লোক পোনা মাছ চাষ ও ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। এবারের মৌসূমের প্রথম দিকে প্রচন্ড খরার কারনে অনেককে পুকুরে শ্যালো অথবা ডিপটিউব ওয়েল থেকে পানি তুলে পুকুর ভরতে হয়েছিল। মাছ বিক্রি করার সময় আসার ঠিক কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে শুরু হয় অবিরাম বৃষ্টি। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারনে পুকুর গুলোতে অতিরিক্ত পানি জমে যায়। পুকুরে প্রচুর পরিমানে মাছ থাকা সত্ত্বেও জেলেরা মাছ তুলতে পারেনি। পুকুরে সাধরনতঃ ৫ থেকে ৭ ফুট পানি থাকলে মাছের পোনা গুলো সম্পূর্ণভাবে তুলে আনা যায়। কিন্তু পানি ১০ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত জমে থাকার কারনে সব মাছ তুলে আনা সম্বব হয়নি।

মাছচাষী আব্দুল করিম জানান,যশোর জেলার শার্শা,বেনাপোল,নাভারন,বারোবাজার,
সাতক্ষীরা জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর পাইকারী খরিদ্দার আসেন ব্রজবাকসা বাজারে। ভোর থেকে প্রায় সারাদিন চলে বেচা কেনা। বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা ট্রাক,পিকআপ,নছিমন,ভ্যানসহ বিভিন্ন্ যান বাহন নিয়ে আসেন মাছের পোনা কিনতে।

সাতক্ষীরা যশোর মহা সড়কের উপরে চলে বেচা কেনা । ক্রেতাদের ভীড়ে সড়কের উপর যানজটের সৃষ্টি হয়। মহা সড়কটি অত্যান্ত সরু হওয়ার কারনে স্থানীয় জন সাধারন ও সড়কে চলাচল কারী যানবাহনের ড্রাইভার,হেলাপারদের সাথে প্রায়ই বচসা হয়। এতে করে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পাইকারী ক্রেতারা এখন এই বাজারে মাছ কিনতে আসাতে অনিহা প্রকাশ করছেন। তারা এখন যশোরের চাচড়া সহ অন্যান্য স্থানের বাজার গুলোতে ভীড় জমাচ্ছেন।

পোনা মাছ চাষী আব্দুল ওহাব জানান, রুই,কাতলা,মৃগেল,কার্প,পুটি,কৈ,মাগুর সহ সব ধরনের মাছের পোনা এখানে উৎপাদন হয়। এলাকার ১৯ টি হ্যাচারী আছে। এমন কোন মাছ নেই যা ঐ হ্যাচারী গুলো উৎপাদন করা হয় না। মাছ চাষীরা জানান, ব্যাংক থেকে লোন নিতে গেলে অনেক গুলো শর্ত পূরণ করতে হয়। কিন্তু এনজিও গুলো থেকে লোন নিতে তা লাগে না । ফলে তাদেরকে বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে লোন নিয়ে মাছ চাষ করতে হচ্ছে।

বাজার এলাকার প্রধান সড়কটি প্রশস্ত করে,সহজ শর্তে ঋন এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে ঐতিহ্যবাহী পোনা মাছের এ ব্যবসাটি যাতে যুগ যুগ ধরে চলতে থাকে এবং মাছ চাষীরা তাদের ভাগ্য বদলাতে পারে তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গহনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকার হাজারো মাছ চাষী।



মন্তব্য চালু নেই