কলেজ ছাত্রীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে পালিয়ে নিয়ে সহবাস, অতঃপর সেই যুবক লাপাত্তা

দীর্ঘদিনের প্রেম, আর সেই প্রেম থেকেই দুজনের বিয়ে হবে বলে ছেলে-মেয়ে দু’পক্ষই আলোচনায় বসে সমাধান করা হয়। কিন্তু বিয়ের আগেই চম্পট দিল ছেলে, আর ছেলের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নিয়েছে কনে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের জলপাইগুড়ি কোতয়ালি থানার সিভিক ভলান্টিয়ারের পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের হাকিমপাড়ায়।

জানা গিয়েছে, হাকিমপাড়ার বাসিন্দা এক যুবতীর সঙ্গে গ্রামেরই ছেলে ধীরজ দেবনাথের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দীর্ঘ পাঁচ বছরের বেশি সময় তাঁদের সম্পর্ক ছিল বলে জানা যায়। ওই যুবতী জলপাইগুড়ি প্রসন্নদেব মহিলা মহাবিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। এবং ধীরজ দেবনাথ সিভিক ভলান্টিয়ার কর্মী।

যুবতীর বাবা পেশায় টোটো চালক। তিনি বলেন, ধীরজের সঙ্গে যুবতীর বিয়ে হবে বলে দু’পক্ষই আলোচনায় বসে সমাধান করা হয়। কিন্তু ছেলেটি কয়েকদিন থেকেই পলাতক।

রবিবার রাত থেকেই ওই যুবতী পাত্রের বাড়িতে ধর্নায় বসেছেন বিয়ের দাবিতে। যুবতীর বাবার দাবি, ‘আমরা মেয়েকে অনেক বুঝিয়েছি, কিন্তু মেয়ে কোনমতেই ওই ছেলে ছাড়া বিয়ে করতে রাজী নয়।’

ওই যুবতী জানিয়েছেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। গত ১৯ অগষ্ট ধীরজ আমাকে নিয়ে পালিয়ে যায়।’ জানা গিয়েছে, ওই যুবতীকে নিয়ে ধীরজ মণ্ডলঘাটের উকিলপাড়ায় জামাইবাবুর বাড়িতে গিয়ে ওঠে। চারদিন ওই যুবতীকে নিয়ে ধীরজ তার জামাইবাবুর বাড়িতেই ছিল। সেখানেই ওই ধীরজ তাঁর সঙ্গে শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হয় বলেও দাবি ওই যুবতীর।

ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরেই দুই বাড়ির পক্ষ থেকে আলোচনায় বসে দু’জনের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ধীরজ এবং ওই যুবতী বাড়িতে ফিরে আসার পরে গত ২৩ অগষ্ট বিয়ের রেজিস্ট্রির জন্য তারা আবেদন করে। গত ২০ নভেম্বর দু’জনের রেজিস্ট্রি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছেলেটি রেজিস্ট্রি করার জন্য আসেনি। এর পরেই মেয়েটি ধীরজের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে ধর্নায় বসে। আগামী বছর জানুয়ারি মাসের ১৯ তারিখ দু’জনের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই ধীরজ পালিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ ওই যুবতীর।

এদিকে পাহাড়পুর হাকিমপাড়ার ধীরজ দেবনাথের ঠাকুমা মায়া দেবনাথ বলেন, ‘আমাদের বিয়ে দিতে কোন আপত্তি নেই। আমরা বিয়ে দিতে রাজি আছি। কিন্তু আমরা ওদের বাড়িতে ঢুকতে দেব না।’

জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিকাশ বসাক বলেন, ‘আমরা আলোচনা করে বিষয়টি মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ছেলেটি আমাদের প্রতারিত করল। আমরা চাই, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাটি মিটে যাক। বিয়ের রেজিস্ট্রি হওয়ার আগেই ছেলেটি পালিয়ে গিয়েছে। এখন এলাকাবাসী ক্ষেপে গিয়েছেন। কারণ, ছেলেটি এতদিন মেয়েটির সঙ্গে এত ঘনিষ্ঠতার পরে এখন বিয়ে না করে পালিয়ে যাবে, এটা ঠিক নয়।’

কোতয়ালি থানার আইসি আশিস রায় বলেন, ‘আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে অভিযোগ এলে আমরা তদন্ত করব।



মন্তব্য চালু নেই