কল্যাণী হবে বিশ্বের রোল মডেল : পলক

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে কল্যাণী বিশ্বের রোল মডেল হবে। তিনি বলেন, কল্যাণীর নারীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে, আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুবিধাবঞ্চিত প্রতিটি পরিবারে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি এবং যোগাযোগ এই সব বিষয়গুলো সংযুক্ত করবে। তারা ডিজিটাল ক্যামেরা নিয়ে যাবে, ল্যাপটপ নিয়ে যাবে। আর সাইকেলকে বাহন হিসেবে ব্যবহার করে তারা নিজেদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে।

শনিবার নাটোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দেশের ১৬টি জেলার কল্যাণীর তথ্য ও জরুরি সেবার নবযাত্রা উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় ১৬ জেলার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করা হয়। আইসিটি ডিভিশনের সহযোগিতায় ডিনেটের উদ্যোগে এই সেবা চালু করা হচ্ছে।

উদ্বোধনকালে নাটোরের সাবেক জেলা প্রশাসক মুক্তিযোদ্ধা মো. খলিলুর রহমান, বর্তমান জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন, ডিনেটের নির্বাহী পরিচালক অনন্য রায়হান, নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের মহাপরিচালক বনমালী ভৌমিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে জেলার শংকর গোবিন্দ চৌধুরী স্টেডিয়াম থেকে কল্যাণীদের নিয়ে শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় মন্ত্রী ছাড়াও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

পলক বলেন, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। আর এই অর্ধেক নারীকে জনশক্তিকে রূপান্তরিত করতে হবে। তাদের তথ্য প্রযুক্তির সেবায় প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আর এদের কাজ হবে কানেকটিভি সব জায়গায় পৌঁছে দেয়া। আজকে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পেরেছি এটা সম্ভব হয়েছে কানেকটিভির কারণে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন সরকার একা কোনো কাজ করতে পারে না। তার জন্য প্রয়োজন বেসরকারি উদ্যোগ এবং সরকারের এক সঙ্গে কাজ করা। আমাদের কল্যাণী মোটামুটি এইসব উদ্যোগের সব কিছু কভার করবে। ইতোমধ্যেই ডিনেটের প্রতিষ্ঠান ড. অনন্য রায়হান বলেছেন, নারীদের যদি মূল অর্থনীতির কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে পারি তবে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের চেয়ে আরো বাড়বে।

জুনাইদ আহমেদ বলেন, আমরা যে ১৬ জেলায় এই কার্যক্রম শুরু করেছি এর প্রতিটিতে প্রায় এক হাজার করে কল্যাণী প্রশিক্ষণ নিয়ে সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র অসহায় মানুষের সেবা দেবে।

পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী চান প্রতিটি পরিবারে অন্তত একজন সদস্যের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে। আমরা আশা করি ২০২১ সাল নাগাদ আমাদের কল্যাণী প্রকল্পটি সরকার এবং বেসরকারি উদ্যোগে এগিয়ে যাবে। এটা শুধু বাংলাদেশেই না, বিশ্বের কাছে একটি অন্যতম রোল মডেল হবে। তাই আজকে ১৬ জন জেলা প্রশাসকের কাছে আমি অনুরোধ করবো- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমাণে তারা নেতৃত্ব দেবেন। আশা করি কল্যাণী প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আমরা আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবো।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইন্দোনেশিয়ার জনসংখ্যা আমাদের চেয়ে তিনগুণ। সে দেশে আমাদের চেয়ে মুসলমানের সংখ্যা অনেক বেশি। তারা কিন্তু উন্নত দেশ হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ সেখানকার মেয়েরা সব ধরনের কাজ করছে। এছাড়া কাতার, মালয়েশিয়া উন্নত দেশের সদস্য হয়েছে। আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো?

প্রসঙ্গত, দেশের সুবিধাবঞ্চিত নারীদের গৃহস্থালি সামগ্রী থেকে প্রসূতি মায়ের চিকিৎসা সেবা, তথ্য, কৃষি এবং ডিজিটালসহ যাবতীয় সেবা প্রধান করবে কল্যাণীরা। নারীরাই এসব সেবা দেবে। ২০২১ সালের মধ্যে দেশে ১০ হাজার কল্যাণী তৈরি করবে সরকার ও ডিনেট। এ জন্য ২০১৭ সালের মধ্যে দেশের ১৬টি জেলায় এক হাজার করে কল্যাণী তৈরি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই