কাকে গডফাদার বললেন এসপি?

চোরাচালানীদের গডফাদার, সন্ত্রাসীদের গডফাদার, অপরাধীদের গডফাদারের কথায় আমার বদলি হবে না। আল্লাহ যতদিন চাইবেন, সরকার যতদিন মনে করবে ঠিক ততদিন যশোরে থাকবো। বদলি নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা সভায় এভাবেই কথা বললেন যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান।

সোমবার দুপুরে জেলা কালেক্টরেট ভবনে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গডফাদার অবিহিত করে এ বক্তব্য দিলে উপস্থিত সংসদ সদস্যরাসহ অন্য সদস্যরা মিটিমিটি হেসে ফেলেন। আর সভা শেষ হলেই উপস্থিত অনেকে এসপি কাকে ‘গডফাদার’ বললেন তা নিয়ে কানাকানি করেন। তবে এসপি ওই নেতার নাম বলেননি। তার বদলি নিয়ে নানা গুঞ্জন উঠলে তিনি আইন-শৃঙ্খলা সভায় এভাবেই তার ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

নির্ধারিত সময় আধা ঘন্টা পর দুপুর ১২ টার দিকে শুরু হয় যশোর জেলার আইন-শৃঙ্খলা সভা। সভাপতিত্ব করেন জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ডক্টর হুমায়ুন কবীর। তার সমাপনী বক্তব্যের আগে বক্তব্য দেন- পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান।

বদলির বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য শুরু করে এসপি বলেন, ‘আমি সবার উদ্দেশ্যে বলি- চোরাচালানীদের গডফাদার, সন্ত্রাসীদের গডফাদার, অপরাধীদের গডফাদারের কথায় আমার বদলি হবে না। আল্লাহ যতদিন চাইবেন, সরকার যতদিন মনে করবে ততদিন যশোরে থাকবো।’ একাধিক বার এই কথা বলার সময় মিটিমিটি হেসে ফেলেন যশোর-৩ আসনের এমপি কাজী নাবিল আহম্মদসহ উপস্থিত অনেকে।

এসপি কাকে ‘গডফাদার’ বলে বক্তব্য দিলেন এবিষয় ক্ষমতাসীন দলের জনপ্রতিনিধিরা বুঝলেও প্রকাশ করেননি। তবে এসপি কাকে গডফাদার বলেছেন সভা শেষে অনেককে তা নিয়ে আলোচনা করতে শোনা যায়। অনেকে নামও প্রকাশ করেন।

এদিকে, এক ‘প্রভাবশালী’ নেতার ভয়ে শহরের সিটি কলেজের পাশে একটি ধর্ষণ ঘটনায় ডাক্তাররা পরীক্ষার সঠিক রিপোর্ট দিতে পারেনি বলেও এসপি অভিযোগ করেন। এসময় তিনি বলেন, হুমকি দিয়ে ডাক্তারি রিপোর্ট পাল্টানো গেলেও পুলিশ ছাড়বে না। দ্রুত ধর্ষণের চার্জশিট দেয়া হবে।

সভায় যশোর-২ আসনের এমপি মনিরুল ইসলাম বলেন, চৌগাছা-ঝিকরগাছার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কপোতাক্ষ নদে পাটা উচ্ছেদে প্রশাসন অভিযান চালালে তিনি সহযোগিতা করবেন। এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও যাতে চৌগাছার বলুসহ মেলা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে।

সভায় যশোর-৩ আসনের এমপি কাজী নাবিল আহম্মেদ বলেন, ভৈরব নদে অবৈধ পাটা দিয়ে অনেকে দখল করে রেখেছে। এ অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে।

সভায় যশোর-৫ মণিরামপুরের এমপি স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, তার এলাকায়ও বিভিন্ন নদীতে পাটা দিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এজন্য অসংখ্য মানুষ এখন পানিবন্দি। এবিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন- যশোর সরকারি এমএম কলেজ, সিটি কলেজ, মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল হাসান, সিভিল সার্জন শাহাদাৎ হোসেন, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল আরিফ, চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুষমা সুলতানা, শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সালাম, উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জু, যশোর পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ জাহাঙ্গীর আহম্মেদ শাকিল, ঝিকরগাছা পৌরসভার মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই