কাবা শরিফের ইতিকথা

কাবা আল্লাহর ঘর। বিশ্ব মুসলিমের সম্মিলনস্থল। এ স্থানে প্রতিবছর সমগ্র বিশ্বের মুসলমানগণ আল্লাহর নির্দেশ পালনে একত্রিত হয়। গড়ে তোলে আত্মার বন্ধন। কিন্তু আমরা কী জানি এ কাবা নির্মাণের ইতিকথা? সংক্ষেপে আওয়ার নিউজ বিডি’র পাঠকদের জন্য কাবা নির্মাণের ইতিকথা তুলে ধরা হলো-

>> আল্লামা বাগভি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, আল্লাহ তাআলা জমিন সৃষ্টির দুই হাজার বছর পূর্বে কাবা শরিফের স্থান সৃষ্টি করেছিলেন। এ স্থানটি ছিলো একটি সাদা ফেনা, যা পানি রাশির ওপর স্থির হয়েছিল। তার নীচে জমিন বিস্তার লাভ করে।

আল্লাহ তাআলা যখন হজরত আদম আলাইহিস সালামকে জমিনে পাঠিয়ে দেন, তখন তিনি অত্যন্ত ভীত হয়ে আশ্রয় লাভের জন্য তাঁর নিকট আরজি পেশ করেন। তখন আল্লাহ তাআলা জান্নাত থেকে ইয়াকুতের তৈরি বাইতুল মামুর অবতীর্ণ করে বর্তমান কাবা ঘরের স্থানে স্থাপন করেন। ইয়াকুত পাথরে নির্মিত বাইতুল মামুরের দুটি দরজা ছিল জমরূদের তৈরি। যার একটি ছিল পূর্ব দিকে অপরটি পশ্চিম দিকে।

অতপর আল্লাহ তাআলা হজরত আদম আলাইহিস সালামকে নির্দেশ দিলেন, ‘হে আদম! আমি তোমার জন্য একটি ঘর অবতীর্ণ করেছি। ঘরটিতে তুমি এমনভাবে তাওয়াফ কর যেমনিভাবে আরশের চারিদিকে তাওয়াফ করতে এবং এর নিকট এমনভাবে নামাজ আদায় কর যেভাবে আরশের নিকট নামাজ আদায় করতে।

হজরত আদম আলাইহিস সালাম আল্লাহর হুকুম শুনে হিন্দুস্থান থেকে পায়ে হেঁটে মক্কা মুয়াজ্জামায় পৌঁছলেন। তাঁকে কা’বা শরিফের রাস্তা দেখাতে আল্লাহ তাআলা একজন ফেরেশতা নিয়োগ করেছিলেন। হজরত আদম আলাইহিস সালাম মক্কায় পৌঁছেই হজ সম্পাদন করেন। হজ পালন করার পর একজন ফেরেশতা ঘোষণা করেছিলেন, ‘হে আদম! আপনার হজ কবুল হয়েছে। আর আমরা আপনার দু’হাজার বছর পূর্বে এ ঘরে হজ সম্পাদন করেছি। (তাফসিরে মাজহারি)

>> হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, হজরত আদম আলাইহিস সালাম ৪০ বার হজ করেছেন। হজরত নুহ আলাইহিস সালামের যুগের মহাপ্লাবনের পূর্ব পর্যন্ত বাইতুল মামুর দুনিয়াতেই ছিল। এরপর আল্লাহ তাআলা বাইতুল মামুরকে আসমানে উঠিয়ে নেন।

>> পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে কা’বা ঘর পুনঃনির্মাণের নির্দেশ প্রদান করেন। বর্ণনায় এসেছে, একটি মেঘখণ্ড বাইতুল্লাহ শরিফের স্থানে ছায়া ফেলে, যা দেখে দেখে হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম সে ছায়ার পরিমাপ মোতাবেক বর্তমান পবিত্র বাইতুল্লাহ নির্মাণ করেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র বাইতুল্লাহ যিয়ারাতের তাওফিক দান করুন। আমিন।



মন্তব্য চালু নেই