কারখানার লিফটের গর্তে মিলল নিখোঁজ কর্মকর্তার লাশ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ ইন্টারস্টপ অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার ভেতর থেকে নিখোঁজ হওয়ার দুদিন পর এক কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার দিনভর নানা নাটকীয়তার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন শিল্প পুলিশ গাজীপুর ২-এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো আবদুল খালেক। তিনি জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।

তবে এ ব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সারা দিন সাংবাদিকদেরও কারখানায় প্রবেশ করতে দেয়নি কর্তৃপক্ষ।

নিহত দীপক কুমার সাহা (৩৩) গাজীপুরের পূর্ব চান্দরা বোর্ডমিল এলাকার দেবব্রত সাহার ছেলে। তিনি ওই কারখানায় ফিনিশিং কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায়।

নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত শনিবার (৫ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাতের ডিউটিতে আসেন দীপক। এরপর তিনি আর বাসায় ফিরে যাননি।

এ ঘটনায় দীপকের পরিবার বারবার কারখানায় যোগাযোগ করে। তখন কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই রাতে দীপক কারখানায় আসেননি। পরে গতকাল রোববার রাতে দীপকের বাবা কালিয়াকৈর থানায় অভিযোগ দেন।

সোমবার সকালে পুলিশ দীপকের খোঁজে তদন্তে নামে। তখন বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। এ ঘটনায় কারখানা এলাকায় সকাল থেকে উত্তেজনা বিরাজ করলে বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশের একটি সাঁজোয়া যান কারখানার গেটে দুপুরের পর থেকে অবস্থান নেয়।

নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার কারখানার অভ্যন্তরে লাশ থাকার অভিযোগ করলেও কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমের কথা বলতে থাকে। বিকেল ৫টায় কারখানা ছুটির পর পুলিশ নিহতের পরিবারের লোকজনসহ কারখানায় ভেতরে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করতে থাকে।

একপর্যায়ে কারখানার অভ্যন্তরে নির্মাণাধীন নতুন ভবনের লিফটের গর্ত থেকে দীপকের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে তা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ কারখানার উপমহাপরিদর্শক (ডিজিএম) রফিকুল ইসলামসহ পাঁচ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।

কালিয়াকৈর থানার ওসি মো. আবদুল মোতালেব মিয়া জানান, লিফটের গর্ত থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের ঠোঁট, কনুই ও হাঁটুতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ঘটনার মূল কারণ জানা যাবে। থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।



মন্তব্য চালু নেই