কারখানা মালিক বিএনপির সাবেক এমপি মকবুল হোসেন ‘পলাতক’

গাজীপুরের টঙ্গীতে যে প্যাকেজিং কারখানাটিতে আগুন লেগেছে সেটির মালিক বিএনপি নেতা মকবুল হোসেন। ২০০১ সালে তিনি সিলেটের গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার আসন থেকে বিএনপির হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

ভোরে আগুনে কারখানাটিতে ব্যাপক প্রাণহানি ও অগুনতি শ্রমিকের ভাগ্য নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেও তিনি একটিবারের জন্য কারখানা এলাকায় যাননি। তার সঙ্গে যোগাযোগও করা যাচ্ছে না কোনোভাবে। স্থানীয় প্রশাসনও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। তিনি ফোন বন্ধ করে রেখেছেন।

ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসের ভোরে এই আগুন লাগার পর থেকে কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন না। গাজীপুর জেলা প্রশাসক এ এম আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, `আজ অফিস করে বিকালে বেতন ও বোনাস দিয়ে ঈদের জন্য ছুটি দেয়া কথা ছিল।’ এই দুর্ঘটনার কারণে বেঁচে যাওয়া শ্রমিকরা আজ বেতন ভাতা-পাবেন কি না, সেটা বলতে পারছেন না কেউ।

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাহেনুল ইসলাম, ‘আমি ঘটনা পরপরই এখানে এসেছি। কিন্তু কারখানার মালিক বা ম্যানেজারদের পাইনি। মালিক এখনো পালাতক রয়েছে। জিএমের নিচের পদের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছি। তিনি ঈদের ছুটিতে ফরিদপুর বাড়ি গেছেন। তাকে আসতে বলা হয়েছে।’

আমাদের সিলেট প্রতিনিধি খালেদ আহমদ জানিয়েছেন, সাবেক সংসদ মকবুল হোসেনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত স্থানীয় আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন দিলু জানিয়েছেন, মকবুল হোসেনের প্রথম দিককার ব্যবসা এই তাম্পাকো ফ্যাশন। তবে মকবুল এখন কোথায় আছেন, তার সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করা যাবে-এ বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি জনাব দিলু।

মকবুল হোসেন স্থানীয়ভাবে লেচু মিয়া নামেই বেশি পরিচিত। সাবেক সরকারি কর্মকর্তা হলেও এরশাদ আমলে তিনি ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত পান। এক পর্যায়ে ধনকুবের বলে পরিচিত হয়ে উঠেন তিনি।

১৯৮৬ সালে মকবুল হোসেন প্রথম স্বতন্ত্র হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের পর তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে এক এগারোর পর রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন মকবুল হোসেন।

এলাকায় রাজনীতি করার সময় তিনি বেশ কিছু স্কুল প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি স্থানীয় মসজিদে অনুদান দিতেন। তবে রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দেয়ার পর থেকে আর এলাকায় যান না।



মন্তব্য চালু নেই