কারাগারে কেমন আছেন ক্রিকেটার শাহাদাতের স্ত্রী

শিশু গৃহকর্মী মাহফুজা আক্তার হ্যাপিকে নির্যাতনের মামলায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার পেসার শাহাদাতের স্ত্রী জেসমিন জাহান নিত্যকে রাজধানীর মালিবাগ এলাকার বাবার বাড়ি থেকে রোববার গ্রেফতার করে পুলিশ।

এরপর ওইদিনই ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হয় তাকে। নিত্যের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করলেও আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

সোমবার কারাসূত্রে জানা যায়, শাহাদাতের স্ত্রী জেসমিন জাহান নিত্যকে সাধারণ হাজতিদের মহিলা ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। সাধারণ হাজতিদের মতোই খাবার-দাবার সরবরাহ করা হচ্ছে তাকে। নিয়ম অনুযায়ী সকালে একটি বড় আকারের রুটির সঙ্গে সামান্য গুড়, দুপুর ১২টার দিকে ভাতের সঙ্গে সবজি এবং রাতে ভাতের সঙ্গে মাছ অথবা মাংস; তার সঙ্গে সবজি ও ডাল দেওয়া হচ্ছে।

সাধারণ হাজতিদের মতোই লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার সংগ্রহ করেছেন নিত্য। তবে এসময় তাকে মুখে কাপড় দিয়ে বিরক্ত বোধ করতে দেখেছেন সেখানে উপস্থিত কারারক্ষী ও নারী হাজতিরা।

নিত্যের এরকম আচরণ দেখে উপস্থিত কারারক্ষীরা তার উত্তরও দিয়েছেন। তারা বলেছেন, এখানে আসলে এ রকম নিয়মই মানতে হবে। এটা শ্বশুরবাড়ি না যে, বসে আর শুয়ে খাবেন। আর নারী হাজতিরা তাকে কটাক্ষ করে অনেক কথাই বলেছেন।

কারা সূত্রটি জানায়, ইয়াবা মামলায় কারাগারে আসা সাবিনা নামে এক নারী হাজতির সঙ্গে নিত্যের বাকবিতণ্ডা হয়। সাবিনা তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমি তো ইয়াবা বিক্রির দায়ে জেলে আইসি, আর তুই তো কাজের মেয়েকে মারছস। আমার চেয়ে তোর কামডা খুবই খারাপ। তোরা সুন্দরী ও বড়লোক, কিন্তু তোদের মনডা কালা। এই খানে আইসা আবার ভাব মারাস।’ এরপর কারারক্ষীর হস্তক্ষেপে তাদের দুজনের বাকবিতণ্ডা বন্ধ হয়।

ওই সূত্রটি আরো জানায়, সোমবার কারাগারে জেলকোড অনুযায়ী নিত্যের সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় শুকনো খাবার ও কিছু কাপড়চোপড় তার হাতে তুলে দেন তারা।

এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুর রহমান জানান, আদালতের আদেশের কপি এখনো হাতে পাইনি। সম্ভবত আজকে (সোমবার) ওই আদেশের কপি পাবো। কপি পেলে আগামীকাল মঙ্গলবার জেলগেটে গিয়ে জেসমিন জাহান নিত্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এছাড়া শাহাদাতের বিরুদ্ধেও আদালতে নতুন করে রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানান তিনি।

৬ সেপ্টেম্বর ক্রিকেটার শাহাদাতের মিরপুরের বাসায় গৃহকর্মী হ্যাপিকে নির্যাতন করা হয়। শিশুটি কৌশলে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ওইদিন দুপুরের দিকে শাহাদাত মিরপুর থানায় এসে হ্যাপি কাউকে না বলে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে মর্মে একটি জিডি করেন। ওইদিন সন্ধ্যার দিকে পল্লবী থানাধীন কালসী এলাকা থেকে সাংবাদিক মোজাম্মেল হকের সহযোগিতায় শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সাংবাদিক মোজাম্মেল বাদী হয়ে শাহাদাত ও তার স্ত্রীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

সেই মামলায় শাহাদাত ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালায়। কিন্তু তারা পালিয়ে থাকায় গ্রেফতার সম্ভব হয়নি। অবশেষে রোববার সকালে নিত্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর শাহাদাত সোমবার আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।



মন্তব্য চালু নেই