কিশোর সন্তানের অভদ্র আচরণ মোকাবিলার ৫টি পন্থা

যদি আপনার কিশোর সন্তানটি আপনার কথার পিঠেই কথা বলে অথবা চিৎকার করে বা আপনি কথা বলতে শুরু করা মাত্রই আপনাকে চোখ রাঙ্গাতে থাকে তাহলে নিশ্চয়ই আপনি খুব মর্মাহত হন। আপনি যখন বুঝার চেষ্টা করেন যে কেন সে এমন করছে তখন উপলব্ধি করেন, কৈশোরে পদার্পণ করেছে বলেই সে এমনটা করছে। কিশোর বয়সের ছেলে অথবা মেয়ে উভয়েই হয়ে উঠে দুর্বোধ্য, চ্যালেঞ্জিং এবং কখনো কখনো সামান্য ভীতিকর। কিভাবে এই রকম পরিস্থিতি সামাল দেয়া যায় তার জন্য কিছু টিপস জেনে নেই আসুন।

১। আপনার অভিভাবকত্ত্ব বজায় রাখুন
এটা আপনার সন্তানের সাথে বন্ধুর সম্পর্ক গড়ে তুলার সময় না। “দ্যা এভ্রিথিং টুইন” বইটির লেখক, পিএইচডি, লিন্ডা সোন্না বলেন, “বৈপরীত্য প্রকাশ হওয়া সত্ত্বেও তার বিভ্রান্তিকর ষ্টেজে সে আপনার কাছ থেকে সাহায্য আশা করে”। পরিশেষে সে একটি সূত্র বা ইংগিত পেয়ে যাবে যে, এই রকম পরিস্থিতিতে আপনি কি রকম আচরণ করেন।

২। ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না
এটা খুবই কঠিন একটি ব্যাপার তারপর ও আপনার সন্তানটি কি বললো তা ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না। আপনার সন্তানের সাথে সব সময় ক্লিয়ার থাকুন এবং সরাসরি কথা বলুন। যদি আপনার সন্তানটি উদ্ধতভাবে কথা বলে তাহলে তাকে বলুন, “আমার সাথে এভাবে কথা বলো না, আমি এটা পছন্দ করিনা”। পেরেন্টিং বা অভিভাবকত্ব কোন জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা নয়। আপনার নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন এবং আপনার উচিৎ সীমা নির্ধারণ করা। আপনার সন্তান আপনার সঙ্গী বা সমকক্ষ নয়। তাই অভিভাবক হিসেবে আপনার কিছু নিয়ম থাকা অত্যাবশ্যকীয়। আপনি এখন দায়িত্বে আছেন তাই আপনার সন্তান আপনার দেখানো পথই অনুসরণ করবে।

৩। প্রস্তুত থাকুন
বয়ঃসন্ধিকালে কিছুটা অভদ্র ও অসম্মানজনক আচরণ করা স্বাভাবিক এবং এর জন্য প্রস্তুত থাকুন। যদি এটি ইতিমধ্যেই হয়ে থাকে তাহলে আবার ও এমন হতে পারে বলে প্রস্তুত থাকুন। তখন আপনি কি করতে পারেন সেই বিষয়ে পরিকল্পনা করুন। আপনার সন্তান যতই আপনাকে বিতর্কের জন্য আহবান জানাক না কেন আপনি তাতে অংশ গ্রহণ করবেন না। শুধু একটি নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করে দিন যাতে সে সেটি অতিক্রম করতে না পারে। নিজেকে নিজে বলুন, “একজন অভিভাবক হিসেবে এই সীমা নির্ধারণ করে আমি সঠিক কাজটিই করেছি”।

৪। যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করুন
যখন আপনার সন্তানটি যখন ছোট ছিলো তখন হয়তো তাকে ইতিবাচক কথার মাধ্যমে বা কোন কিছু উপহার দিয়ে অনেক কিছু শিখাতে পেরেছেন। কিন্তু কিশোর কিশোরিকে শাসন করার জন্য বড় শাস্তি নিয়ে আসতে হবে বিষয়টা এমন না। তাদের সাথে কিছুটা কঠোর হতেই পারেন তবে সে সেটা কতটুকু মেনে নিবে তা বুঝেই শাস্তি নির্ধারণ করবেন।

৫। একজন শিক্ষক ও কোচের মত হোন
আপনার সন্তানকে আচরণ শিক্ষা দেয়ার দায়িত্ব আপনার এবং তার হতাশা দূর করার দায়িত্ব ও আপনার। একজন অভিভাবক তিনভাবে তার দায়িত্ব নির্বাহ করতে পারেন যেমন- শিক্ষক হিসেবে, কোচ হিসেবে এবং সীমা নির্ধারণকারী হিসেবে। তার আচরণ কেমন হওয়া উচিৎ তা শিক্ষা দিন, যখন সে কোন ভালো কাজ করে তখন তাকে উৎসাহ দিন প্রশিক্ষকের মতোই এবং মন্দ কিছু করলে তার সীমার কথা তাকে স্মরণ করিয়ে দিন।
মনে রাখবেন আপনার এই সব নিয়ম কানুনের একমাত্র উদ্দেশ্য সে যেন একজন ভালো ও দায়িত্ববান মানুষ হিসেবে বর্তমান বিশ্বে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। এজন্য আপনার সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দিন।



মন্তব্য চালু নেই