কি হয়েছিল দুবাই শেখ পুত্রের?

প্রাচ্যের ধনী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম দুবাই। দেশটির প্রধানের নাম শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম। তার আমলেই দুবাই গ্লোবাল সিটি হিসেবে স্বীকৃতি পায়। বাণিজ্যিক উন্নয়ণ থেকে শুরু করে শহরের সৌন্দর্য্য বর্ধণে নিত্য নতুন পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মসুলিম বিশ্বের শেখদের মধ্যে তাকে অগ্রগামী ধরা হয়। সম্প্রতি শেখ মোহাম্মদ কিন আল মাকতুমের বড় সন্তান শেখ রশিদ হঠাৎ করেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। গত শুক্রবার ৩৩ বছর বয়সী এই শেখ নিজ বাড়িতেই মারা যান বলে জানা যায়।

দুবাইয়ের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম থেকে বলা হয়েছে যে, ৩৩ বছর বয়সী শেখ রশিদের মৃত্যু হয়েছে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে। কিন্তু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডেইলি মেইল অনলাইন অবশ্য শেখ রশিদের মৃত্যুর অন্য কারণ তুলে ধরেছে বিশ্ববাসীর সামনে। কারণ গণমাধ্যমটির মতে, শেখ রশিদের মৃত্যুর সঙ্গে অনেকগুলো প্রশ্ন জড়িয়ে আছে, যে প্রশ্নের উত্তরগুলো না পাওয়া পর্যন্ত এই মৃত্যুকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলা যাচ্ছে না।

শেখ রশিদ রাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা স্বত্ত্বেও গত এক বছর ধরে তাকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। তিনি হলেন দুবাইয়ের শেখের প্রধান স্ত্রীর সন্তান। সেই হিসেবে পিতার মৃত্যুর পর আরও ২৩জন সন্তান থাকার পরেও তারই হওয়ার কথা ছিল দুবাইয়ের শেখ। দেশটির বিশাল পর্যটন খাতের পুরো দেখাশোনা শেখ রশিদ একাই করতেন বলে জানা যায়। এমনকি দুবাইয়ে ইউরোপ কায়দায় দালান তৈরির মূল পরিকল্পনাকারীও ছিলেন তিনি।

কিন্তু এতকিছুর পরেও শেখ রশিদের ঘোড়দৌড়ের নেশা ছাড়াও বিভিন্ন মাদকের প্রতিও ছিল তার আকর্ষণ। কোকেন এবং হাসিসে আসক্ত ছিলেন তিনি। তার দেড় বিলিয়ন ডলার মূল্যের বাড়িতে ২০১১ সালের পর বিশেষ কাউকে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি। তবে শেখ পরিবারের সঙ্গে ঘণিষ্ঠ কিছু সূত্র জানায়, শেখ রশিদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই পরিবারের সমস্যা চলছিল। কারণ যুক্তরাজ্য থেকে পড়ালেখা করে আসা রশিদের পক্ষে পারিবারিক ধ্যানধারণা মেনে নেয়া সহজ হয়নি। নিজের ব্রিটিশ এইডকে হত্যা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কারণে বেশ কয়েকবারই দুবাই শেখকে জনসমক্ষে আসতে হয়েছিল।

প্রশ্ন উঠেছে, যদি শেখ রশিদ স্বাভাবিকভাবেই মারা গিয়ে থাকেন তাহলে কেন তার লাশ জনসমক্ষে আনা হলো না। খুব গোপনে জাবেল রাজপ্রাসাদের ভেতরে কবর দেয়া হয়েছে শেখ রশিদকে। অনেকেই ধারণা করছেন, মসনদে আরোহন সংক্রান্ত সমস্যা ও দীর্ঘদিনের অসন্তোষের কারণেই হয়তো শেখ রশিদকে পরিবারের অন্তকলহের শিকার হতে হয়েছে। যদিও এই ধারণার পক্ষে এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণাদি পাওয়া যায়নি।



মন্তব্য চালু নেই