কীভাবে বুঝবেন আপনি আসলেই ভালো ব্যবসায়ী কিনা?

আপনার কোনো একটি বিশেষ গুণ দেখে বন্ধুরা হয়তো প্রায়ই আপনাকে বলে যে আপনি ভালো উদ্যোক্তা হতে পারবেন। অনেকেই হয়তো মত দেন যে, আপনার এখনই চাকরি ছেড়ে দেয়া উচিত। ব্যবসায়ী হওয়া উচিত আপনার লক্ষ্য। আপনি নিজেও হয়তো শখের কাজটিকে পেশা হিসেবে নিতে চান, চান নিজস্ব একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু চাকরি ছাড়া, ক্যারিয়ারের দিক বদলে ফেলা অনেক বড় একটি সিদ্ধান্ত। কীভাবে বুঝবেন আপনি আসলেই ভালো ব্যবসায়ী হয়ে উঠবেন কিনা?

নিচের ৭ বিষয় পর্যালোচনা করে চিনে নিন নিজের পথ অপরিচিতদের সঙ্গে সহজে সখ্যতা একজন উদ্যোক্তাকে অবশ্যই অপরিচিতদের সঙ্গে সহজে মিশতে পারতে হবে। আপনি যদি নতুন মানুষদের সঙ্গে মিশতে সঙ্কোচ বোধ করেন তাহলে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ণ গুণটি আপনার নেই। বন্ধুদের আড্ডায় বেশি বেশি কথা বলুন, নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে মিশুন, নতুন বন্ধু তৈরি করুন।

কোনে সমস্যাই জন্মগত বা চিরস্থায়ী নয়। চেষ্টা করলেই আপনি সবার সঙ্গে সহজ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবেন। নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেয়া ব্যবসায় রয়েছে নানা উত্থান-পতন। কখনো হয়ত আশা করেছেন আপনার একটা ডিজাইন বা কাজ ভালো চলবে, কিন্তু চলল না। হয়তো ব্যংক থেকে লোন চেয়েছেন, কিন্তু পাননি। অনেক কষ্টে কিছু ক্লায়েন্ট পেয়েছেন, প্রতিযোগী ব্যবসায়ী আপনার মার্কেট দখল করে নিল। কিন্তু হতাশ হওয়া যাবে না।

যে কোনো সময়ই আবার নতুন করে শুরু করার জন্য তৈরি থাকতে হবে। সবসময় বিশ্বাস করতে হবে, আপনি পারবেন। নিজের সঙ্গে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা আপনার অর্থনৈতিক সঙ্গে বেশি বা কম যে কোনোটাই হতে পারে। হয়তো আপনি ব্যাংকে কিছু টাকা জমিয়েছেন, অথবা হয়তো আপনার কাছে খুবই সামান্য কিছু টাকা আছে, তেমন সঞ্চয় নেই। সঙ্গে যা-ই থাকুক আপনার সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।

অনেকের পূর্ব ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা না থাকলেও টাকা গুছিয়ে খরচ করার গুণ থাকে। ব্যবসায়ে এটি খুবই জরুরি। সাংগঠনিক ক্ষমতা আপনার নিজস্ব ব্যবসায় আপনিই বস। কিন্তু ভালো সাংগঠনিক ক্ষমতা না থাকলে কর্মীদের দিয়ে কাজ করাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হবে আপনাকে। অনেক কোম্পানিতে দেখা যায়, প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি চাহিদার তুলনায় কম।

কিন্তু ব্যবস্থাপনা ভালো হওয়ায় তারা অনেক প্রজেক্ট সময়মতো শেষ করতে পারেন। কিন্তু ব্যবস্থাপনা ভালো না থাকলে সব উপাদান থাকলেও দেখা যায় কাজ উঠে আসে না। নিজের সম্পর্কে ক্রমাগত বলতে পারা ধরুন, বন্ধুর সঙ্গে কোনো কোনো পার্টিতে গেছেন। অনেকের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। নিজের প্রতিষ্ঠানের নাম নিজেরই বলে দিতে হবে কথার ফাঁকে। এমন একটা কথা বলতে হবে অনেক কথার মাঝে যেটা ঠিক মনে থাকবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, সে সব মানুষরা ব্যবসায় বেশি সফল যারা সবসময় নিজের গুণগান করতে পারেন, নিজের যেটা প্রয়োজন মিষ্টি কথায় সেটা অপর মানুষের মাথায় ঢুকিয়ে দিতে পারেন। প্রকৃতিগত ভাবেই আপনি প্রতিযোগিতা পছন্দ করেন ব্যবসায় প্রতিযোগিতা অনেক।

ক্ষুদ্র বিনিয়োগে প্রতিযোগিতা, ঝুঁকি অনেক বেশি বড় ব্যবসার তুলনায়। কিন্তু আপনি যদি প্রতিযোগিতা বিমুখ মানুষ হন, তাহলে ব্যবসা আপনার জন্য নয়। একজন ব্যবসায়ীকে সারাক্ষণ প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে হয়। তাদের নতুন কাজ, কৌশল প্রত্যক্ষ করতে হয়। নিজেকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে সচেষ্ট হতে হয়। কারণ আপনি যদি সামনে এগিয়ে না যান তাহলে অচিরেই হারিয়ে যাবেন।

উপদেশ গ্রহণের মানসিকতা একজন উদ্যোক্তার অবশ্যই উপদেশ গ্রহণের মানসিকতা থাকতে হবে। আপনি কতটা অভিজ্ঞতাকে মূল্যায়ন করেন তার উপর নির্ভর করে আপনি কেমন মানুষ এবং ভবিষ্যতে কেমন উদ্যোক্তা হবেন। যখন আপনি ব্যবসায় নামবেন, আপনাকে ক্রেতার সমালোচনা শুনতে হবে, অভিজ্ঞদের উপদেশ শুনতে হবে।

সেগুলো গ্রহণ করতে পারলে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন আপনার কোথায় ভুল হচ্ছে এবং কি করতে হবে। নিজেকে প্রশ্ন করুন, যাচাই করে নিন আপনার ব্যক্তিত্ব। বেছে নিন সঠিক ক্যারিয়ার, চাকরি নাকি ব্যবসা। ভুল সিদ্ধান্ত ভুল পথে নিয়ে যাবে আপনাকে, ভেঙে দেবে আত্মবিশ্বাস।



মন্তব্য চালু নেই