কী এই ভয়ংকর জিকা ভাইরাস

সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বকে ইবোলা ভাইরাস মুক্ত ঘোষণা করেছে। কিন্তু সেই আনন্দের রেষ কাটতে না কাটতেই আরেক ভাইরাসে প্রাদুর্ভাবে কপালে পড়েছে শঙ্কার ভাঁজ। নতুন এই শঙ্কার নাম ‘জিকা ভাইরাস’।

এতোদিন শুধুমাত্র আফ্রিকার দেশগুলোতে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থাকলেও, বর্তমানে এটি ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে। অতি সম্প্রতি এ নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এরপরই বিশেষ সতর্ক অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র।

প্যান আমেরিকার স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বর্তমানে ভাইরাসটি মধ্য এবং ল্যাটিন আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। গত বছর প্রায় ৩০ লাখ লোক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

মশাবাহিত জিকা ভাইরাসের সংক্রামনে অস্বাভাবিক ছোট মাথা নিয়ে জন্ম নিচ্ছে শিশু। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় শিশুদের এই সমস্যাটিকে ‘মাইক্রোসেফালি’ বলা হয়। জিকা ভাইরাসের এখন পর্যন্ত কোন চিকিৎসা বা প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি।

জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলো হচ্ছে হালকা জ্বর, চোখে ব্যাথা ও মাথাব্যাথা। রোগটি এডিস নামের মশাবাহিত। গর্ভাবস্থায় কোন নারী জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার শিশু অস্বাভাবিক আকৃতি নিয়ে জন্ম নেয়। এখন পর্যন্ত রোগটির কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ায় বেশ কয়েকটি দেশে নারীদের কমপক্ষে আটমাস গর্ভধারণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান বলেন, প্রাণঘাতী ভাইরাসটি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া শুরু করলে আমাদের দেশসহ অন্য যে কোন দেশই আক্রান্ত হতে পারে। এটি সময়ের ব্যাপার মাত্র।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু দক্ষিণ এশিয়ার কোন দেশে এখনও ভাইরাসটির সংক্রমণ দেখা যায়নি তাই এটি এখনও কর্তৃপক্ষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয় নয়। জিকা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিকে সনাক্ত করা খুব কঠিন। কেউ আক্রান্ত কিনা সেটি জানতে হলে প্রথমে তাকে কয়েকটি মেডিকেল টেস্ট করাতে হবে। তাই এয়ারপোর্ট বা সীমান্ত এলাকা দিয়ে কোন আক্রান্ত ব্যক্তি প্রবেশ করলে সেটি ঠেকানো খুবই কঠিন হবে।

অধ্যাপক মাহমুদুর সতর্ক করে বলেন, ভাইরাসটি যদি এদেশে প্রবেশ করে তবে এর মাধ্যমে গর্ভবতী নারীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিগ্রস্থ হবেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনার পুনরাবৃত্তি করে অধ্যাপক মাহমুদুর সমগ্র দেশবাসীকে মশার কামড় থেকে সতর্ক থাকতে উপদেশ দিয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই