কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে তিন বিঘা জমির পটল ক্ষেত কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : এখন আমি সংসার চালাবো কিভাবে। ঋণের কিস্তিইবা কিভাবে পরিশোধ করবো। পটল গাছগুলোকে রেখে দূর্বৃত্তরা আমার গলায় কেন ছুরি চালায়নি। শক্রবার রাতে র্দুবৃত্তের কেটে দেয়া সাড়ে ৩ বিঘা ফলন্ত পটল ক্ষেতের পাশে বসে এভাবে বিলাপ করছিলেন বর্গাচাষী আবুল হোসেন (৬০)।

নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের পশ্চিম রামখানার বাঁশের ভিটা গ্রামের ভূমিহীন বর্গাচাষী আবুল হোসেন (৬০)র ক্ষেতের সবগুলো পটল গাছ কেটে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। হোসেন আলী গত দুই বছর ধরে পাশ্ববর্তী প্রসাদের কুটি গ্রামে বিঘা প্রতি ৮ হাজার টাকা বাৎসরিক চুক্তিতে জমি ভাড়া নিয়ে চাষাবাদ করে আসছিলেন। এজন্য তিনি এনজিও এবং কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। তিন বিঘা জমিতে সর্বসাকুল্যে খরচ হয় প্রায় লক্ষাধিক টাকা। গত মে মাস থেকে প্রতি সপ্তাহে ৩০-৩৫ মন করে পটল ক্ষেত থেকে উঠতে শুরু করে। যা পাইকারীভাবে তিনশত থেকে চারশত টাকা মণ দরে বিক্রি করে আসছিলেন তিনি। আগামী ছয় মাস পর্যন্ত তিনি একই পরিমানে পটল বিক্রি করতে পারতেন। সব খরচ বাদ দিলেও ১ বছরে জমি থেকে আয় হতো প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা। যা দিয়ে তিনি ঋণের কিস্তি পরিশোধের পাশাপাশি ৬ সদস্যের সংসার চালাতেন। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন লাভের টাকায় জমি বন্ধক নিয়ে চাষের পরিধি বাড়াবে। কিন্তু তার স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। দুর্বৃত্তরা গোড়ায় কেটে দেয় তার সাড়ে তিন বিঘা জমির ফলন্ত পটল গাছ।

শনিবার সকালে তিনি পটল ক্ষেতে এসে দেখতে পায় তার সমস্ত ক্ষেত শুকয়ে যাচ্ছে। নেতিয়ে পড়েছে গাছগুলো। তার সমস্ত ক্ষেতের পটল গাছগুলোর গোড়া কেটে দেয়া হয়েছে।

প্রতিবেশি মোস্তফা কামাল, মিজানুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন, আবুর কাশেম, নাজমুল হোসেন বলেন আবুল হোসেন একজন নিরীহ ভূমিহীন বর্গাচাষী। তার এমন ক্ষতি মানা যায় না। এ ক্ষতি তিনি কাটিয়ে উঠতে পারবেন না।

জমির মালিক খলিলুর রহমান ও নুর ইসলাম জানান, আবুল হোসেন সাড়ে তিন বিঘা জমি বার্ষিক ভাড়া নিয়ে সবজির চাষাবাদ করে আসছিলেন। কে বা কারা তার জমির পটল গাছ কেটে দিয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে কেউ প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে তার এমন ক্ষতি করেছে।

রামখানা ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম বলেন, আমি বিষযটি শোনার পরে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেত দেখে এসেছি। যারা এ অপকর্মটি করেছে তারা শুধুমাত্র ওই দরিদ্র কৃষকের ক্ষতি করে নাই, দেশের কৃষি অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি করেছে। তাদের খুজে বের করে আইনের আওতায় দেয়ার পরামর্শ দিয়েছি। এ খবর লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা প্রস্তুতি চলছে।



মন্তব্য চালু নেই