কুড়িগ্রামে চাঞ্চল্যকর শিশু অপহরণ মামলার ২ আসামী গ্রেপ্তার

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রাম শহরের চাঞ্চল্যকর শিশু অপহরণ মামলায় পুলিশ জান্নাতুল ফেরদৌস রানী (২৪) ও সারা খাতুন ঐশীকে (২৩) নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে শনিবার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে। আসামী দু’জন বিচারকের সামনে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে শিশু আল আমিন তৌফিককে (১৩মাস) অপহরণের অপরাধের কথা স্বীকার করেন। পরে আদালতের নির্দেশে আসামীদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই তালেব জানান, কুড়িগ্রাম শহরের ঘোষপাড়া এলাকার আতাউল করিম স্বপনের পুত্র আল আমিন তৌফিককে পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসাবে গত বুধবার দিবাগত রাতে বাড়ি থেকে অপহরণ করে। পুলিশ প্রথমে জান্নাতুল ফেরদৌস রানীকে আটক করে ফাঁদ পেতে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার চৌবাড়ী এলাকা থেকে উদ্ধার করে।

পরে রাণীকে সাথে নিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাতে উল্লাহপাড়া উপজেলার চরবদ্ধগাতা এলাকা থেকে অপর আসামী সারা খাতুন ঐশ^ীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। শনিবার বিকালে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রাণী ও ঐশ^ীকে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে অপরাধের কথা স্বীকার করেন। তদন্ত করে অপরাপর আসামীদেরও অল্প সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে।

কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস সোবহান বলেন, তৌফিকের পিতা আতাউল করিম স্বপন বাদি হয়ে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন। ২০০০সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধন/৩) এর ৭/৩০ মতে মামলা রুজু করা হয়। আসামী করা হয়েছে কনস্টেবল আব্দুল হালিমের স্ত্রী রেখা পারভীন (৫০) ও তার কন্যা জান্নাতুল ফেরদৌস রানী এবং রাণীর বান্ধবী সারা খাতুন ঐশ^ীকে। এছাড়া অজ্ঞাত আরো আসামী রয়েছে। তদন্ত করে অন্য আসামীদের সনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে। সারা খাতুন ঐশ^ী’র বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাহপাড়া উপজেলার চরবদ্ধগাতা গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুস সাত্তার। ধারনা করা হচ্ছে অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রের সদস্য।

উল্লেখ্য, চাঞ্চল্যকর শিশু অপহরণের ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাত ৮টায়। কুড়িগ্রাম শহরের ঘোষপাড়ার মিস্ত্রীপাড়া এলাকায়। অপহরণের পর খোঁজা-খুঁজি করে হদিস না পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ খবর পায়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে অপহৃত শিশুটির পিতা আতাউর করিম স্বপনের খালাতো বোন জান্নাতুল ফেরদৌস রানীকে সন্দেহ করে। তাকে থানায় নিয়ে এসে রাত ভর জিজ্ঞাসবাদ করার পর ভোর রাতে রাণী ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।

রাণী পুলিশকে জানান, সিরাজগঞ্জের তার বান্ধবী ঐশী’র মাধ্যমে শিশুটিকে রাতেই পাচার করেদেয়। এভাবেই বের হয়ে আসে থলের বেড়াল। এরপর পুলিশ কৌশলে ফাঁদ পেতে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অপহৃত শিশু তৌফিককে কামারখন্দ উপজেলার চৌবাড়ী বাজার এলাকা থেকে উদ্ধার করে। পরে স্বপনের চাচাত ভাই ঐ এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা কবির শিশুটিকে উদ্ধার করে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে।



মন্তব্য চালু নেই