বন্যায় ডুবে মৃত ১৩ : ডায়রিয়ায় আক্রান্ত সাড়ে ৬ হাজার

কুড়িগ্রামে বানভাসী মানুষের চরম দুর্ভোগ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে বন্যার পানি কমে গেলেও বানভাসী মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। ১৬ দিনের বন্যায় মানুষের জীবনযাত্রাঅচল হয়ে পড়েছে। বন্যায় পানিতে ডুবে মারা গেছে ১৩জন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ১ লাখ ৫০ হাজার ৫৮৬ পরিবারের প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষ। এরমধ্যে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ ২২ হাজার ৬৭৫ জন। ৭হাজার ১২ হেঃ জমির ফসল নষ্ট হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের সংখ্যা ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৬৩ জন। বন্যায় ৫৪ কিলোমিটার বাঁধ ও ৩৯টি ব্রীজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কাচা সড়ক ৪৭৪ কিলোমিটার ও পাকা সড়ক ৫২ কিলোমিটার ভেঙে গেছে। প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ২৪৮টি। ৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ হাজার ৬৮৪ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। গবাদিপশু মারা গেছে ৭৭টি। পানি কমার সাথে সাথে ছড়িয়ে পড়েছে রোগবালাই। গত ২৪ ঘন্টায় ডায়রিয়ায় আক্রন্ত হয়েছে ৭৯জন।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজার রহমান জানান, মঙ্গলবার ধরলা নদীর পানি ৫সে.মি ও ব্রহ্মপূত্র নদের পানি ২২ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

কুড়িগ্রাম ত্রাণ বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব মোল্লা জানান, সরকারি হিসাবে জেলার ৯ উপজেলার ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৭ টি ইউনিয়নের ৭২৮ গ্রাম প্লাবিত হয়। এখন পানি নেমে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত জিআর চাল বিতরণ করা হয়েছে এক হাজার ৩৭৫ মে.টন এবং জিআর ক্যাশ দেয়া হয়েছে ৩৮ লাখ। মজুদ আছে ১০০ মে.টন চাল ও ৫ লাখ টাকা। এছাড়া ২হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমের কর্মকর্তা আখের আলী জানান, মঙ্গলবার রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের নয়ার চরের যারহাদ আলীর কন্যা রওশনারা (২০) পানিতে ডুবে মারাগেছে। চলতি বন্যায় এপর্যন্ত পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা দাড়াল ১৩ জনে। অপর মৃতরা হলেন, রৌমারীর ঝগড়ার চরের আলম হোসেনের পূত্র জাহিদ (১), গয়টাপাড়ার মজুন মিয়ার কন্যা আশা মনি (২), কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চর বড়াইবাড়ীর তাজুল ইসলামের পূত্র মোস্তাকিন (২), নাগেশ্বরীর বেরুবাড়ী এলাকার আব্দুল মান্নানের কন্যা মারুফা (১৬), কালিগঞ্জ ইউনিয়নের ভবানন্দের কুটি এলাকার মৃত: রজনী চন্দ্র নন্দীর পূত্র নারায়ণ চন্দ্র নন্দী (৫৫), হাসনাবাদ ইউনিয়নের সিংহের হাটের ছোলায়মানের কন্যা খাদিজা (১৮), ভুরুঙ্গামারীর বলদিয়ার নবী হোসেনের পূত্র শহীদ হোসেন (১৫মাস), উলিপুরের অনন্তপুর এলাকার কান্তারা চন্দ্র দাসের পূত্র সারু চন্দ্র দাস (১৮), চিলমারীর অস্টমীরচরের আব্দুস ছামাদের কন্যা শিল্পী (১৬মাস), রমনা সরকার পাড়ার মৃত: পনির উদ্দিনের পূত্র উসমান আলী (৪৫), সবুজ পাড়া এলাকার শাহিনের পূত্র নাজিম (১৫) এবং রাজিবপুরে অজ্ঞাতনামা নূর মোহম্মদ (৭০)। এরা সকলেই পানিতে ডুবে মারা যায়। এ সময়ে জেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ৬হাজার ৭১০ জন।



মন্তব্য চালু নেই