কেন হেসেছিলেন দা ভিঞ্চির মোনালিজা? অবশেষে ভেদ হল রহস্য

যতটা বিখ্যাত পেইন্টিং, ততটাই বিখ্যাত ছবির ভিতরে থাকা মেয়েটির মুখের হাসি। লিওনার্দো দা ভিঞ্চির আঁকা লিজা ঘেরাদিনির পোর্ট্রেট ‘মোনালিজা’র হাসির রহস্য ভেদ করতে গিয়ে বিগত পাঁচ শতাব্দী ধরে গলদঘর্ম হয়েছেন অজস্র শিল্পবিশেষজ্ঞ এবং সাধারণ দর্শক। কখনও মনে হয়েছে, মোনালিজার মুখে লেগে রয়েছে তির্যক ব্যঙ্গের হাসি। আবার একটু বেশিক্ষণ সেই হাসির দিকে তাকিয়ে থাকলে মনে হয়, কোনও অব্যক্ত বেদনা যেন ফুটে বেরোচ্ছে সেই হাসিতে। শেষ পর্যন্ত মোনালিজার হাসির রহস্য যে কী, সেই প্রশ্নের কোনও সর্বজনসম্মত উত্তর মেলেনি। কিন্তু এ বার সেই প্রশ্নের বহু প্রতীক্ষিত উত্তরটি পাওয়া গিয়েছে। অন্তত ইউনিভার্সিটি অফ ফ্রেইলবার্গের স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের তেমনটাই দাবি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জুয়েরগেন কোরনিমিয়ের সংবাদমাধ্যমকে জানাচ্ছেন, একটি বিশেষ সমীক্ষার ফল হিসেবে তাঁরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, কোনও বিশেষ মানসিক বিচলন নয়, মোনালিজার হাসি সুখের হাসি। আনন্দের কারণেই হেসেছিলেন মোনালিজা।

কিন্তু কী ভাবে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন বিশেষজ্ঞরা? তাঁরা জানাচ্ছেন, মোনালিজার হাসির রহস্য ভেদ করতে একটি বিশেষ সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। লিওনার্দো দা ভিঞ্চির আঁকা এই অমর চিত্রকলার কেন্দ্রস্থ নারীটির ঠোঁটের দু’টি প্রান্ত সামান্য উপরের দিকে তুলে অথবা নীচের দিকে বেঁকিয়ে মোনালিজার চারটি ‘একটু বেশি খুশি’ এবং চারটি ‘একটু বেশি বিষণ্ন’ সংস্করণ তৈরি করেন তাঁরা। তার পর প্রকৃত মোনালিজা কোনটি, তা জানতে না দিয়ে ১২ জন দর্শককে এই ন’টি ছবি অদল-বদল করে দেখানো হয় মোট ৩০ বার। দর্শকদের জানাতে বলা হয়, কোন মোনালিজাটিকে তাঁরা ‘খুশি’ বলে মনে করছেন, এবং কোন মোনালিজার মুখে তাঁরা দেখছেন বিষণ্নতার ছাপ। দেখা যায়, প্রত্যেক দর্শক প্রতিবারই আসল মোনালিজাকে দেখে, তার হাসিটিকে আনন্দের হাসি বলেই চিহ্নিত করেন।

কোনও মানুষের মুখের অভিব্যক্তি অন্য মানুষের মনে তার সম্পর্কে কী ধারণা গড়ে তোলে, সেই সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার লক্ষ্যেই এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। এবং বিজ্ঞানীরা বলছেন, সমীক্ষার এই ফলাফল মানুষের মনের সেই গহীন রহস্য ভেদে অনেকটাই সহায়ক হবে।



মন্তব্য চালু নেই