কোন ‘অভিমানে’ কুমিল্লার আসিফ বরিশালে?

কুমিল্লা তার প্রাণের শহর। ব্যস্ত নগরী ঢাকা থেকে একটু রেহাই মিললেই ছুটে চলে যান তাঁত, খাদি, মৃৎ, কারুশিল্প আর রসমালাইয়ের শহরে। সেখানকার আলো-বাতাসেই যে বেড়ে ওঠেছেন আসিফ। কণ্ঠের যাদুতে যিনি গোটা বাংলাদেশে এক নামেই পরিচিত। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতা এই মানুষটিই কি-না নিজের শহরের দল রেখে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) গলা ফাটাচ্ছেন বরিশাল বুলসের হয়ে! ঠিকই শুনেছেন- আসিফ কুমিল্লার নন, বরিশালের!

কিন্তু নিজের শহর রেখে কেন আরেকটি দলের হয়ে গ্যালারি মাতাচ্ছেন তুমুল জনপ্রিয় এই গায়ক? এর পেছনে কী এমন অভিমান? রোববার রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে তার দলের ব্যাটিং মিরপুরের ভিআইপি গ্যালারিতে বসে প্রাণভরে উপভোগ করলেন। ইনিংস বিরতিতে সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে কথা হলো গায়ক আসিফের সঙ্গে।

কথা বলতে গিয়ে অবশ্য রাখঢাক করলেন না ক্রিকেটপ্রেমী এই তারকাটি। বললেন, ‘আসলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স বিপিএলে নাম লেখানোর আগেই আমি বরিশালের সমর্থক। ওরা আমাকে সম্মান দেয়। বিশেষ করে দলটির অন্যতম ফ্র্যাঞ্চাইজি ভুলু ভাইয়ের (আবদুল আউয়াল চৌধুরী) অনুরোধেই জড়িয়ে আছি দলটির সঙ্গে। আমি এখন বুলসের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। তাছাড়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগও করেনি। ব্যাপারটা নিয়ে কথাও বলেনি। আমিই বরং বিনা পয়সায় ওদের হয়ে কনসার্ট করেছি। বরিশালের মানুষদের কাছ থেকে ভালোবাসা পাচ্ছি বলেই আজ মাঠে ছুটে এসেছি।’

‘ও প্রিয়া ও প্রিয়া তুমি কোথায়’- গানটি দিয়ে ২০০১ সালে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পাওয়া আসিফ ক্রিকেটাঙ্গনেও বেশ জনপ্রিয়। তার গাওয়া- ‘বেশ বেশ, সাবাস বাংলাদেশ’ দীর্ঘ সময় জাতীয় ক্রিকেট দলের থিম সংয়ের মতো বেজেছে। এখনো টাইগারদের খেলা থাকলে লাউড স্পিকারে বেজে ওঠে আসিফ আকবরের সেই দীপ্ত কণ্ঠের গান।

রোববার মিরপুরেও বাজল আসিফের গাওয়া গান। সেটা অবশ্য বরিশাল বুলসের থিম সং, ‘বরিশাল বুলস সামাল, সামাল; বরিশাল বুলস কামাল, কামাল।’ তার এমন উপস্থিতেও জেগেও উঠলো মুশফিকের দল। তুললো ১৯২ রান।

সেই খেলা পাগল সঙ্গীত শিল্পীটি অনেক অনেক দিন পর আবারো ঢাকার কোনো মাঠে বসে খেলা দেখলেন। আসিফ বলছিলেন, ‘হিসেব করে দেখলাম, ঠিক আট বছর পর আবারো মিরপুরের শেরে বাংলায় খেলা দেখতে এসেছি। সময়-সুযোগ ঠিকঠাক মতো হচ্ছিল না বলে আসতে পারিনি। তাছাড়া সাবেক অনেক ক্রিকেটারই আমাকে আসতে বলছিলেন, তাদেরকে দেয়া কথাটাও রাখলাম।’

আসিফ জানালেন, এখন নিয়মিতই গ্যালারিতে থাকতে চেষ্টা করবেন। বিপিএলের ম্যাচ দেখতে চট্টগ্রামেও যাওয়ার পরিকল্পনা আছে ৪৪ বছর বয়সী এই কণ্ঠশিল্পীর।

বরিশালের হয়ে গলা ফাটানোর পরই গান গাইতে কানাডা উড়াল দেয়ার কথা আসিফের।



মন্তব্য চালু নেই