কোকেনকাণ্ড: অভিযোগপত্রে ‘ত্রুটি’, ফের তদন্তের নির্দেশ

ভোজ্যতেলের ঘোষণা দিয়ে তরল কোকেন আমদানির ঘটনায় মাদক আইনের মামলায় পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে ‘ত্রুটি’ থাকায় তা গ্রহণ করেনি আদালত।

চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম রহমত আলী সোমবার অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে র‌্যাবের মাধ্যমে মামলাটির নতুন করে তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে এদিন অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানির দিন ছিল।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রশিকিউশন) কাজী মুত্তাকি ইবনু মিনান বলেন, “মামলার আসামি মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের সম্পৃক্ততার তথ্য দিয়েছেন।

“কিন্তু অভিযোগপত্রে নূর মোহাম্মদকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। এ কারণে ‘তদন্তে ত্রুটি আছে’ উল্লেখ করে আদালত র‌্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে আবার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।”

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কনটেইনার আটক করে সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।

বলিভিয়া থেকে মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে আমদানি করা সূর্যমুখী তেলবাহী কনটেইনারটি জাহাজে তোলা হয় উরুগুয়ের মন্টেভিডিও বন্দর থেকে। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে গত ১২ মে পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে।

পরে আদালতের নির্দেশে কন্টেইনার খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। প্রথমে বন্দরের পরীক্ষায় এসব নমুনায় কোকেনের উপস্থিতি না মেলায় ঢাকার বিসিএসআইআর এবং বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে তরলের নমুনা পুনরায় পরীক্ষা করা হয়। দুই পরীক্ষাগারেই নমুনায় তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।

এ ঘটনায় ২৮ জুন চট্টগ্রামের বন্দর থানায় নূর মোহাম্মদ ও গোলাম মোস্তফা সোহেলকে আসামি করে মাদক আইনে মামলা করে পুলিশ। পরে আদালত মামলায় চোরাচালানের ধারা সংযোগের নির্দেশ দেয়।

গত ১৯ নভেম্বর আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (দক্ষিণ) মো. কামরুজ্জামান।

আসামিরা হলেন- খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল, মো. মোস্তফা কামাল, আইটি বিশেষজ্ঞ মেহেদী আলম, গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী মো. আতিকুর রহমান, সিঅ্যান্ডএফ কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম, কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন) এ কে আজাদ এবং যুক্তরাজ্যের দুই নাগরিক ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া।

এদের মধ্যে ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া পলাতক এবং সাইফুল ইসলাম গত বুধবার উচ্চ আদালতের জামিন নিয়ে কারাগার থেকে ছাড়া পান।

খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয় অভিযোগপত্রে। পুলিশের অভিযোগপত্রে মোট ৫৮ জনকে সাক্ষী করা হয়।



মন্তব্য চালু নেই