কোনটা মিথ্যা মামলা প্রমাণ করুন : খালেদাকে প্রধানমন্ত্রী

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলা মামলাগুলোর মধ্যে কোনটি মিথ্যা কি না সেটি আদালতে প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, তার বিরুদ্ধে বিএনপি যখন মামলা দিয়েছিল সেগুলো তিনি আদালতে গিয়েই লড়েছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া আদালতে যে চান না।

আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন শ্রমিক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠোনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এ কথা বলে।

অনুষ্ঠানে শ্রমিকদের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তার পরিবারকে নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা।

রাতারাতি বড়লোক হলে টাকা থাকে না

নেতা-কর্মীদের সৎ থাকার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়ার পরিবারের উদাহরণ টানেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘রাতারাতি বড়লোক হওয়া যায় না। এই টাকা থাকে না। সন্তান মানুষ হয় না, তারা পড়াশোনা করে না, উচ্ছনে যায়। এক মহিলার সন্তানরা বিপুল টাকা করেছে। কিন্তু তাদের পরিণতি আপনারা দেখেছেন।’

এ সময় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলা মামলা নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নাশকতার অন্তত ১৯টি মামলা চলছে। নানা সময় বিএনপি ও খালেদা জিয়া দাবি করেছেন, এই মামলার সবগুলোই হয়রানিমূলক ও মিথ্যা।

বিএনপির এই অভিযোগের জবাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনটা মিথ্যা মামলা প্রমাণ করুন। কোনো মামলা মিথ্যা কি না, সেটা প্রমাণ করতে হলে তো কোর্টে যেতে হবে। কোর্টে গেলে না বোঝা যাবে সেটা মিথ্যা কি না। কিন্তু আপনি কোনটা করবেন না, কোর্টেও যেতে চান না। কারণ, চোরের মন পুলিশ পুলিশ।’

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর বিরোধীদলীয় নেতা থাকাকালে তার বিরুদ্ধে দেয়া মামলা মোকাবেলা নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মামলা হলো, আমি বললাম ফেইস করবো। আমি কোর্টে যাবো। কিন্তু তখন তারা বলে, কোর্টে আসার দরকার নেই। আমি বললান, কেন আসবো না, মামলা দিয়েছেন, এখন আসতে না করেন কেন?’

খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ না করে এই পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই মহিলা বলেন মিথ্যা মামলা, মিথ্যা মামলা। কিন্তু কোনটা মিথ্যা মামলা? আন্দোলনের নামে মানুষ পোড়ানোর নির্দেশ আপনি দেননি? এতিমের টাকা চুরি করেননি?’

২০১৩ এবং ২০১৫ সালে বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনে পেট্রল বোমায় হতাহতের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা পুড়ে মারা গেছে, এ দৃশ্য তাদের ছেলে বা বাবা দেখেছে, তারা কি বিচার পাবে না? এসব কাজের কি বিচার হবে না? অবশ্যই হবে। যুদ্ধারাধীদের যেমন বিচার আমরা করেছি, এসবের বিচারও হবে।’

বিএনপির আন্দোলন আসলে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য

এই অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদেরকে যারা মদদ দিয়েছে, রক্ষার চেষ্টা করেছে, তাদের বিচারও হবে। তিনি বলেন, ‘অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে, তব ঘৃণা তারে যেন তৃণ সম দহে।’

২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর একাত্তরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষে গঠিত খুনি বাহিনী আলবদরের দুই নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে মন্ত্রী বানান খালেদা জিয়া। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে এই দুই জনেরই ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদেরকে যারা ক্ষমতায় বসিয়েছে, তাদেরকে মন্ত্রী করেছে, তাদের বিচার কেন হবে না।’

২০০৪ সালে চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনাটি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এদেরকে মন্ত্রী বানানোর রেজাল্ট তো এটাই।’

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ বিএনপি-জামায়াতই তৈরি করেছে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাহারা দিয়ে জঙ্গিদের মিছিল করতে সহায়তা করেছে। তাদেরও তো বিচার করতে হবে।



মন্তব্য চালু নেই