কোনো দলের প্রতি ক্ষোভ নেই, নিরপেক্ষ থাকবো : সিইসি

নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা জানিয়েছেন কোনো দলের প্রতি রাগ-বিরাগ বা ক্ষোভ নেই তার। তিনি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। এজন্য তিনি সবার সহযোগিতা চেয়েছেন।

মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও নতুন সিইসিকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। চাকরিতে থাকাকালে প্রশাসনের এই কর্মকর্তা সরকারবিরোধী আমলাদের জোট ‘জনতার মঞ্চের’ সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ বিএনপির। এই অভিযোগে সরকারে থাকাকালে বিএনপি নুরুল হুদাকে দীর্ঘদিন ওএসডি করে রাখে। ওএসডি থাকা অবস্থায়ই তিনি চাকরি থেকে অবসরে যান।

সিইসি বলেন, ‘দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ আছে। সবার সহযোগিতা পেলে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।’ সে নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

নুরুল হুদা বলেন, ‘দীর্ঘ চাকরি জীবনে কোনোদিন কোথাও আপস করিনি। এই দায়িত্ব পালনেও কোনো আপস করবো না। কোনোদিন হারিনি, এবারও হারবো না।’

সিইসি জানান, সবকিছু গুছিয়ে নিতে তাদের এক মাস সময় লাগবে। অন্য কমিশনারদের সঙ্গে বসে কৌশল ঠিক করবেন বলেও জানান নুরুল হুদা।

নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে তিনি কোনো আপস করবেন না। সব দলকে নির্বাচনে আনা নতুন কমিশনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিনি।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিইসি জানান, বিএনপি কী প্রতিক্রিয়া দেবে তা নিয়ে তিনি কোনো দুশ্চিন্তা করছেন না। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে তিনি কাজ করে যাবেন।

সাবেক এই আমলা মনে করেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রধান অন্তরায় রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ। সবার সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও তিনি মনে করেন। তিনি আশা করছেন, আগামী নির্বাচন সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর হবে।

নতুন সিইসি কেএম নুরুল হুদা ১৯৭৩ সালে বিসিএস ক্যাডার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ সরকারের সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসরে যান। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কাজ শুরুর পর কুমিল্লা ও ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেছেন । ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা; পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয় যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। ২০১০ সালে যোগ দেন বাংলাদেশ মিউনিসিপাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে (বিএমডিএফ)। এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে ছিলেন পাঁচ বছর। এর আগে জেমকন গ্রুপের পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ), নর্থ ওয়েস্ট জোন কোম্পানির চেয়ারম্যান বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। যুক্তরাজ্যের ম্যানচেষ্টার ইউনিভর্সিটি ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেন নুরুল হুদা।

গতকাল রাষ্ট্রপতি কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। রাষ্ট্রপতির আদেশের পর রাতেই প্রকাশ করা হয় এ সংক্রান্ত গেজেট। চার কমিশনার হলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ কবিতা খানম এবং সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।



মন্তব্য চালু নেই