কোনো দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী কর্মকাণ্ড চলবে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য বাংলাদেশের মাটি কাউকে ব্যবহার করার সুযোগ দেয়া হবে না।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের দৃঢ় অবস্থান ও ‘জিরো টলারেন্স নীতির’ কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিদ্যুৎ, পল্লি ও নগর উন্নয়ন ও পরিবহন মন্ত্রী মানিক দে রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে কোনো ধরনের বিদ্রোহ বরদাশত করব না। আমরা এ অঞ্চলে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই।’

সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন বলে বাসস জানিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের কর্মকর্তারা শুল্ক ও অন্যান্য বিষয় চূড়ান্ত করেছেন বলে জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন, উভয় পক্ষ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করার জন্য যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ ক্রয় ও সরবরাহ সংক্রান্ত অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবে।’

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের জন্য আরো বিদ্যুৎ লাগবে।

দুটি দেশের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তির পর ছিটমহলগুলো বিনিময়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে এই ইস্যুটির মীমাংসা হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান। সরকার দেশে আরো শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা করার পদক্ষেপ নিয়েছে।’

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বেশ কিছু সীমান্ত হাট স্থাপনের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের পদক্ষেপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।’

যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৬৫ সালের যুদ্ধের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার রেলপথগুলো বাংলাদেশ পুনরায় খুলে দিতে চায়। সরকার রেল যোগাযোগ আরো কার্যকর করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত রেলপথে ডুয়েল গজ রেল লাইন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।’

চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সম্ভাবনার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদার করার লক্ষ্যে ভারত এই বন্দরও ব্যবহার করতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত ও তাদের জনগণের মূল্যবান অবদানের কথা স্মরণ করেন এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, সরকার ও জনগণ ও বিশেষ করে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ত্রিপুরার মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আর্থ-সমাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাপক সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নজিরবিহীন উন্নয়ন সাধন করেছে।’

ত্রিপুরা থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে ত্রিপুরার মন্ত্রী বলেন, ‘ত্রিপুরা থেকে শিগগির বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে।’

মানিক দে বলেন, ‘বাংলাদেশের কুমিল্লা সীমান্তের কাছে ত্রিপুরায় মনারচরে রাজ্য সরকার একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে।

এ সময় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ এবং বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই