কোন কোন ব্যক্তি জীবনে ধনী হতে পারেন না

গোস্বামী তুলসীদাসকে শুধুমাত্র ‘রামচরিতমানস’-এর রচয়িতা বলে মনে করলে ভুল হবে। আসমুদ্রবিমাচল এই ভূখণ্ডে তুলসীদাস নামটি গণচৈতন্যে ধৃত হয়ে রয়েছে আর একটি কারণে। সেই কারণটি তাঁর নামে প্রচলিত দোহাবলি। দুই পংক্তির আশ্চর্য সব কবিতার মধ্যে ধরা রয়েছে নৈতিকতার সদানবীন পাঠ। এই কবিতাগুলি সত্যিই তুলসীদাসের রচনা কি না, তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও একথা বলাই যায়, তাঁর নামে প্রচলিত এই আপ্তবাক্যগুলির অন্তর্নিহিত সত্যতাকে কেউ অস্বীকার করতে পারেননি কয়েকশো বছরেও। অনেক সময়ে তুলসী-দোহাবলী নিহিত থেকেছে ‘রামচরিতমানস’-এর মধ্যেই। রামচন্দ্রের মুখ নিঃসৃত উপদেশ হিসেবে গণ্য হয়েছে এই সব নীতিকথা।

ধনলাভের রহস্য কী— লক্ষ্মণের এই প্রশ্নের উত্তরে রাম জানিয়েছিলেন, কোন কোন ব্যক্তি জীবনে ধনী হতে পারেন না। বলাই বাহুল্য, এই উপদেশ দোহার আকারেই জনপ্রিয়তা লাভ করে। কী রয়েছে সেই উপদেশে, জানা যেতে পারে।

• নেশাগ্রস্ত ব্যক্তি কখনও ধনী হতে পারে না। নেশাই তার যাবতীয় উপার্জনকে ডুবিয়ে দেবে।

• যে বণিক তার অংশীদারদের ঠকানোর মানসিকতা বহন করে, সে কখনওই ধনী হতে পারে না।

• অতিরিক্ত লোভী ব্যক্তির বিপুল ধনলাভ সম্ভব নয়। লোভ তাকে পিছনে টেনে রাখে।

• অন্যের প্রতি দুর্ব্যবহারকারী ব্যক্তি ধনী হতে পারে না।

• উদ্ধত ব্যক্তির পক্ষে ধনী হওয়া অসম্ভব।

হয়তো এই কহাবত গণমানসেরই প্রতিফলন। যে কোনও ধর্ম, যে কোনও সুষম সমাজেই এই নৈতিকতা বজায় থাকে। এখানে তুলসীদাস তাকেই মান্যতা দিয়ে গিয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই