কোরবানির গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত রাউজানের খামারিরা

কোরবানি ঈদের বাজার ধরতে রাউজানে ক্ষুদ্র খামারি গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগ করেছে। পরপর ৩ বছর লোকসান দিয়ে এবার রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় গরুতে লাভ হবে এমনটি আশা করছেন খামারিরা।

উপজেলার পশ্চিম নোয়াজিষপুর গ্রামের ক্ষুদ্র খামারি মিন্টু কান্তি নাথ বলেন, তাদের গ্রামে ৪০টি পরিবার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ক্রসবিড জাতের গরু পালন করছে। তিনি নিজেও পালন করছেন ২টি গরু। একই গ্রামে আরো বিভিন্ন পরিবারে বেশকিছু বড়-মাঝারি-ছোট জাতের গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত রয়েছে খামারিরা। দাম ভাল থাকলে এ বছর ২টি গরু ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করা যাবে বলে মিন্টু আশা করেছে। তিনি আরো বলেন, ২টি গরু ৩ বৎসর আগে পরিচর্যার জন্য প্রতিটি গরু ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় কেনা হয়। আসন্ন ঈদ মৌসুমে প্রতিটি গরু ৫ লক্ষ টাকার উপরে বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করেন। তবে গরু মোটাতাজায় তারা কোনো ইনজেকশন ব্যবহার করেন না বলে দাবি করেন। কৃষিকাজে তারা যে গম, খৈল ও ভুষি পান, তা থেকেই গরুর খাবারের জোগান দেন। তাছাড়া যারা ঈদের ১ থেকে ২ মাস আগে গরু কিনে পালন করে, তারাই ইনজেকশনে গরু মোটাতাজা করেন।

প্রাণিস¤পদ কার্যালয়ের তথ্য মতে, রাউজান উপজেলায় ২০০ টি’র উপর খামার রয়েছে। তবে দানাদার খাদ্য যেমন খৈল, ভুষি ও খুদকুড়ার দাম বৃদ্ধির কারণে উপজেলায় খামারির সংখ্যা কমেছে সূত্রে জানা যায়। গত বছরের চেয়ে এবার দাম ভাল থাকায় ক্ষুদ্র খামারিরা বেশ উজ্জীবিত। সবচে বড় কথা যারাই খামার করছেন, তারা কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত।

এনএটিভি প্রকল্পের পল্লী চিকিৎসক জানান, একসময় ডেকসামেথাসন বা এসটেরয়েড জাতীয় হরমোন বৃদ্ধির ওষুধ খাওয়ানোর প্রচলন ছিল। এই ওষুধ সেবনের ফলে গরুর মাংস দ্রুত বৃদ্ধি হলেও গরুর জীবন বিপন্ন হতো। এখন তো খামারিরা ৬-৭ মাস আগেই গরু কিনে পালন করেন। তাই তারা গরু মোটাতাজাকরণে বেশ সময় পাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, এফএমভি ভ্যাকসিনের অভাবে খামারিদের স্বল্পমূল্যে তা সরবরাহ করতে পারছে না। বাহির এফএমভি ভ্যাকসিন দুই’শ টাকা করে খামারিদের কিনতে হচ্ছে। অথচ সরকারিভাবে এই ভ্যাকসিনের দাম মাত্র পাঁচ টাকা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা সদর, মুন্সিরঘাটা, জলিলনগর, পাহাড়তলী, নোয়াপাড়া, রমজান আলীরহাট, বেরুলীয়া, জানালীহাট, কুণ্ডশ্বরী, গহিরা মৌমুহনী, কালাচান্দ বাজার, নতুনহাট, নোয়াজিষপুর, নদিমপুর, পশ্চিম নদিমপুর, বাশঁডুয়াতল, পল্লেতলীহাট, আমিরহাট, জগ্ননাথহাট, রাবার বাগান, কোতোয়ালীঘোনা, উত্তর-দক্ষিণ-পশ্চিম গহিরা, উত্তর-দক্ষিণ সর্ত্তা, চিকদাইর, পাঠানপাড়াসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে বেশকিছু ছোট ও মাঝারি খামার চোখে পড়ে।



মন্তব্য চালু নেই