ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ডেটিংয়ে শিক্ষার্থীরা, কলেজ ছাত্রীসহ ১০ যুবক-যুবতী আটক

মুচলেকা দিয়ে ৩ রেষ্টুরেন্ট মালিক ও আটক যুবক-যুবতীর মুক্তি স্কুল-কলেজের কথা বলে বিপথগামী শিক্ষার্থীরা সময় কাটায় আলো আধারি রেষ্টুরেন্টে অভিভাবকরা রয়েছেন ঘোর অন্ধকারে। হবিগঞ্জ শহরে স্কুল-কলেজ ও কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে কতিপয় তরুণ-তরুণী বখরে যাচ্ছে। অভিভাবকরা আদৌ জানেন না তাদের প্রিয় সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে।

অতিশয় সামর্থ্যবান অভিভাবকদের এসব তরুণ-তরুণী বাসা থেকে টাকা নিয়ে বের হয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না গিয়ে বিভিন্নস্থানে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছে। যা এখন সামাজিক ব্যধিতে রূপ লাভ করেছে। আর এ ব্যধির সুযোগ নিয়ে অতি মুনাফা লোভী একটি ব্যবসায়ী চক্র কফি হাউজ ও রেষ্টুরেন্টের আড়ালে এদের প্রশ্রয় দিয়ে অধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিভিন্ন চটকদার নামের এসব রেষ্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে স্কুল কলেজের কাছে।

বিশেষ কায়দায় গড়ে উঠা রেষ্টুরেন্ট গুলো আলো আধারিতে ছোট ছোট কক্ষে সাজানো হয়েছে। এসব রেষ্টুরেন্টে প্রবেশ করলে কেউ কারো চেহারা দেখে চিনতে পারবে না। ছোট ছোট কক্ষগুলো পর্দা দিয়ে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে কপোত-কপোতিদের মেলামেশা করতে কোন বিপত্তি না হয়। সকালে স্কুল-কলেজের কথা বলে বের হয়ে এসে তরুণ-তরুণীদের কেউ কেউ ওইসব রেষ্টুরেন্টে ঢুকে ঘন্টার পর ঘন্টা ডেটিং করে থাকে। এ সুযোগে রেষ্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ আকাশ ছোয়া বিল আদায় করে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলতে থাকলেও অভিভাবকরা রয়েছেন ঘোর অন্ধকারে।

হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি ইয়াসিনুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ শহরে এসব কফি হাউজ ও রেষ্টুরেন্টে সফল অভিযান চালিয়েছে। সকাল ১২টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অভিযানে ৩ রেষ্টুরেন্ট মালিকসহ ৫ যুগল যুবক যুবতীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অদুরে আধুনিক স্টেডিয়াম গেইট সংলগ্ন ‘নিরিবিলি’ নামের ফাষ্টফুড রেষ্টুরেন্ট মালিক বানিয়াচং উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের রমিজ উল্লার পুত্র মোঃ নোমান (২৫), শহরের রাজনগর এলাকায় গড়ে উঠা ‘আড্ডা’ নামের রেষ্টুরেন্টের মালিক লাখাই উপজেলার মনতৈল গ্রামের লিয়াকত আলীর পুত্র আব্দ্ল্লুাহ ও একই এলাকায় গড়ে উঠা ‘স্পাইস’ এর মালিক হিরণ মিয়ার পুত্র মোঃ এনামুল (৩২) কেও আটক করে নিয়ে আসা হয়। আটক যুবক-যুবতীরা হলঃ চুনারুঘাট উপজেলার লাদিয়া গ্রামের তাজুল ইসলামের পুত্র রাশিদুল ইসলাম (২২), হবিগঞ্জ সদর উপজেলার কালনী গ্রামের সাহাবুদ্দিনের পুত্র সালাহ উদ্দিন (২১), সুলতান মাহমুদপুর গ্রামের আব্দুল মতিনের পুত্র তাজিকুল ইসলাম (২৫), বানিয়াচং উপজেলার গুনই গ্রামের সাহিদ আলীর পুত্র আলমগীর (২২), নীলফামারি জেলার ডালপট্টি গ্রামের সঞ্জিব কুমারের পুত্র সঞ্জয় রায় (২২), লাখাই উপজেলার মুড়াকড়ি গ্রামের রুমা বণিক (২১), চুনারুঘাট উপজেলার চন্দনা গ্রামের সামছুন্নাহার চাদনী (২০), চুনারুঘাট উপজেলার বগাডুবি গ্রামের সালমা জাহান (২০), সদর উপজেলার গোপায়া গ্রামের আরিফুননেছা (১৯), হবিগঞ্জ শহরের আলম শেট এলাকার তাসলিমা আক্তার (১৯)।

অভিযান চালিয়ে এসব যুবক-যুবতীদের আটক করে থানায় নিয়ে আসার পর তাদের একনজর দেখতে শত শত উৎসুক জনতা ভিড় জমায়। তা সামাল দিতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়েছে। এক পর্যায়ে আটক যুবক-যুবতীরা ভবিষ্যতে এসব অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত হবে না মর্মে মুচলেকা দিলে রাত ৮টার দিকে তাদের অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। এদিকে আটক কফি হাউজ ও রেষ্টুরেন্ট মালিকরা অসামাজিক কার্যকলাপের ব্যবসা করবে না মর্মে অঙ্গীকার করে। একই সাথে তারা আলো আধারী কায়দায় গড়ে উঠা কেবিন সমূহ উন্মুক্ত করে দিবে বলে অঙ্গীকার করে। পরে তাদের মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়া হয়।



মন্তব্য চালু নেই