ক্ষমতাসীন জোটেও রামপালের বিরোধিতা

বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরোধিতা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শরিক দল বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটির স্থায়ী কমিটি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার তাদের অবস্থান প্রকাশ করেছে। কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা কামরুল হাসান বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠান।

রামপাল প্রকল্পের বিরুদ্ধে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আন্দোলন, রামপাল ইস্যুতে বিএনপির অবস্থানের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতাসীন জোটের ভেতর থেকে এই প্রথম কোনো অবস্থান প্রকাশ করা হলো।

ওয়ার্কার্স পার্টির দুই নেতা ক্ষমতাসীন জোটে রয়েছেন। তাদের একজন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, অপরজন রাজশাহীর সংসদ সদস্য ফজলে হাসান বাদশা।

বিবৃতিতে বলা হয়, ওয়ার্কার্স পার্টি সুস্পষ্টভাবে বলতে চায় সুন্দরবন বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ। তার সন্নিকটে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হলে তার প্রতিক্রিয়ায় সুন্দরবনের পরিবেশকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করবে না কেবল, এর সাথে সাথে ওই এলাকায় যে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে তাতে সুন্দরবনের আরও বড় ক্ষতিসাধন হবে।

ওয়ার্কার্স পার্টি আশা করে পরিবেশের বিশেষ করে সুন্দরবনের ক্ষতি সাধন হয় এমন কাজ এই সরকার করবে না। পার্টি দেশের বিদ্যুতের প্রয়োজন মেটাতে এবং শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে রামপালের স্থলে সুন্দরবন থেকে দূরবর্তী কোনো অঞ্চলে ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

রামপাল বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনে পরিপ্রেক্ষিতে ওয়ার্কার্স পার্টি জানায়, চলমান আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে তাদের ঘৃন্য রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণই এর উদ্দেশ্য। ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে বলা হয়, সুন্দরবনসহ দেশের তেল-গ্যাস জাতীয় সম্পদ রক্ষার জন্য তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটিসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন যে দাবি তুলে ধরেছে সে বিষয়ে বিএনপি এ যাবতকাল কোনো কথাই বলেনি। বরং তাদের ক্ষমতার সময় দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের জন্য সম্পূর্ণ অবৈধ পন্থায় এশিয়া এনার্জীর হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রই তারা লিপ্ত ছিল না কেবল তার প্রতিবাদে গড়ে উঠা আন্দোলনকে দমন করার জন্য প্রতিবাদকারী ছয়জনকে তারা হত্যা করেছে।

ওয়ার্কার্স পার্টি জানায়, খালদা জিয়া বিবিয়ানার গ্যাস ক্ষেত্র থেকে পাইপ লাইনে ভারতে গ্যাস রপ্তানির চক্রান্ত বাস্তবায়নে চরম প্রচেষ্টা চালিয়েছে। এখন যখন রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনকে কেন্দ্র করে সুন্দরবন রক্ষার প্রশ্নে দেশবাসী সোচ্চার তখন অন্যসব ইস্যুতে আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়ে তারা এখন ঝোপ বুঝে কোপ মারতে চাচ্ছে।

বুধবার বেগম খালেদা জিয়া গুলশান কার্যালয়ে রামপাল ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলন করেন। সরকারের হঠকারি সিদ্ধান্ত সুন্দরবনকে নিশ্চিত ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প জনবিরোধী ও দেশের স্বার্থবিরোধী বলে মন্তব্য করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।



মন্তব্য চালু নেই