পাটুরিয়া ফেরি ঘাট : ‘খরচ’ দিয়ে তিনি ভিআইপি

তার নাম মাসুদ। কাজ করেন আদালতের সিনিয়র পরামর্শক হিসেবে। সদ্য চাকরিতে যোগ দেওয়া বড় ছেলেকে দেখতে যাচ্ছেন যশোরে। মাঝে মাঝে ছেলের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান পরিবারের সদস্যরা। তেমনি একটি দিন ছিল গত ২০ মে। নিয়মানুযায়ী বিকেল সাড়ে ৩ টার মধ্যে যেতে হবে সেখানে।

তাই শুক্রবার সকালে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে নিয়ে এসি বাসে রওনা দিলেন তিনি। এক সময় পৌঁছালেন পাটুরিয়া ঘাটে। তবে ফেরি পার হতে দীর্ঘ লাইনে পড়ে যায় তাদের গাড়ি।

বাসের ড্রাইভার জানালেন, এই জ্যাম পেরিয়ে ফেরিতে উঠতে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা লেগে যেতে পারে। ভাবনায় পড়লেন মাসুদ সাহেব। ছেলের সঙ্গে দেখা হবে তো? ওই সময় কয়েকদিন আগে একজন ভিআইপির রাস্তার রং সাইড দিয়ে দ্রুত ঘাটে যাবার কথা তার মনে পড়ল তার। একটু ভেবে বাসের ড্রাইভারকে বললেন, মামা দ্রুত যাওয়ার ব্যবস্থা করা যায় কি?

ততক্ষণাৎ উত্তরে ড্রাইভার বললেন, মামা ১ হাজার টাকা দেন। মাসুদ সাহেব পকেটে হাত দিতেই ড্রাইভারের মন্তব্য, আরও আগে বলবেন না? তাহলে তো ১০ মিনিট দাঁড়াতে হতো না। সিগারেট ফেলে গাড়িতে উঠলেন তিনি। ততক্ষণে টাকা পকেটে নিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে মোবাইল ফোনে একজনকে মজিদ ভাই সম্বোধন করে বললেন, ‘মজিদ ভাই খরচ দিয়ে ভিআইপি।’

একই কথা বার বার বলছিল আর গাড়ি রং সাইড দিয়ে চালাচ্ছিলেন ড্রাইভার। শেষ পর্যন্ত কোনো রকম বাধা ছাড়াই সাড়ে তিন ঘণ্টার জ্যাম পার হয়ে গেলেন কয়েক মিনিটে। বাসের অন্য যাত্রীরা মাসুদ সাহেবকে ভিআইপি ভাবলেন। তাই কেউ কেউ এর রহস্যও জানতে চাইলেন।

আর তিনি মনে মনে হাসলেন; কারণ তিনি যে খরচ দিয়ে ভিআইপি। অবশ্য টাকা খরচ হলেও এ জন্যই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দেখা মিলেছে ছেলের সঙ্গে।



মন্তব্য চালু নেই