‘খালেদাকে রাজনীতি থেকে সরাতে চায় সরকার’

মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্যের জেরে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার নিন্দা জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এই মামলা করা হয়েছে। এটা পরিহাস ছাড়া আর কিছু নয়। সরকার খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরাতে চায় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের সেমিনার হলে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি।

সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু। সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আয়োজক সংগঠনের সহ-সভাপতি মেহেদী আহমেদ রুমী, এম এ তাহের, একেএম মোয়াজ্জেম হোসেন, নাজিম উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক তকদীর হোসেন মো. জসীম, সহ-দপ্তর সম্পাদক এসকে সাদী প্রমুখ।

ফখরুল বলেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখা নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া যে বক্তব্য দিয়েছেন সেখানে রাষ্ট্রদ্রোহিতার চিহ্নমাত্র ছিল না। অথচ ওই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।

ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, শুধু এই মামলা নয়, এর আগেও চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। অথচ তিনি ৭১ সালে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। তিনবার প্রধানমন্ত্রী থাকাবস্থায় দেশের উন্নয়ন করেছেন। গণমানুষের জন্য কাজ করেছেন। তিনি স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের স্ত্রী।’

ফখরুলের দাবি, খালেদা জিয়া বাইরে থাকলে তিনি বাইরে থাকলে সরকারের টনক নড়ে যায়, তারা অস্থির হয়ে পড়ে। সে কারণে সরকার তাকে রাজনীতি থেকে সরাতে চায়।’

ছেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে কবরের পাশে কাঁদলেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সবাইকে সাহস যোগানোর জন্য বেগম খালেদা জিয়া বাইরে কাঁদতে পারছেন না বলেও দাবি করেন ফখরুল।

সরকার সাফল্যের সঙ্গে গোটা দেশকে দুই ভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। তিনি বলেন, গ্রাম পর্যায়েও এই বিভক্তি নিয়ে গেছে। এখন চায়ের দোকানেও দল বিবেচনা ক্রেতার আগমন ঘটে। গ্রাম্য সালিশেও দল বিবেচনায় বিচার হয়। এটা দুঃখজনক। সরকার সচেতনভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এটা করেছে। এটা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মোটেই সাহায্য করবে না।’

আন্দোলনের বিকল্প নেই দাবি করে ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, অধিকার রক্ষায় নিজেদেরই ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এসে আমাদের সাহায্য করবে না।’

দেশ কঠিন সময় অতিক্রম করছে দাবি করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আমরা ১৯৫৮ সালে আইয়ুবের সামরিক শাসন দেখেছি। ভয়ঙ্কর পাকিস্তানি শাসন দেখেছি। মুক্তিযুদ্ধপূর্ব সামরিক শাসন ও স্বাধীনতা যুদ্ধেও ভয়াবহতাও দেখেছি। কিন্তু অতীতে এমন দুঃসময় কখনও মানুষ মোকাবেলা করেনি।

ফখরুল বলেন, এখন কথা বললে, মতামত দিলেই অপরাধ। কেউ এখন আর নিরাপদে নেই। সবকিছু চলছে স্বৈরাচারের ইচ্ছানুযায়ী। তারা যা চাইবে তাই হবে। ফলে গণতান্ত্রিক সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে। এমন অবস্থার মধ্যেই আমাদের সংগঠিত হতে হবে। জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে বিরোধী দলকে দায়ী করা হচ্ছে। জঙ্গিবাদ ইস্যুতে আমাদের ওপর দায় চাপানো হয়। বিরোধী দলসহ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এটা মোকাবেলা করা উচিত। এক্ষেত্রেও জাতীয় ঐক্যেও বিকল্প নেই।



মন্তব্য চালু নেই