খালেদার উপস্থিতিতে সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের দুর্নীতির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই বিচারক আবু আহমেদ জমাদারের বিশেষ জজ-৩ আদালতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

পূবালী বাংকের বৈদেশিক শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার সাক্ষী এইচ এম ইসমাইলকে জেরা করছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক খান।

এরপর সকাল পৌনে ১১টায় রাজধানীর বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে হাজির হন খালেদা জিয়া। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে তিনি গুলশান ২নং সেক্টরের ৭৯ নম্বর রোডের ১ নম্বর বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে আদালতের উদ্দেশে রওনা দেন।

গত ৩ সেপ্টেম্বর পূবালী ব্যাংক উত্তরা শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার এসএম ইসমাইল, জনতা ব্যাংক সাত মসজিদ শাখার জিএম শেখ মকবুল ও একই ব্যাংকের জিএম ফাহমিদা রহমান সাক্ষ্য দিয়েছেন।

এর আগে দু’জন সাক্ষীকে জেরা করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী। ওই দুই সাক্ষী হলেন সোনালী ব্যাংক ফকিরাপুল শাখার সিনিয়র অফিসার ইনসানউদ্দিন আহমেদ ও ওই ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার শাহজাহান খান।

এদিকে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে তা বাতিল চেয়ে আপিল বিভাগে রিভিউ পিটিশন দাখিল করা হবে বলে অপর একটি আবেদন দাখিল করা হয়।

এর আগে সর্বশেষ গত ৩ আগস্ট খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা দিয়েছিলেন। ওই দিন তার উপস্থিতিতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর রশিদকে খালেদা জিয়ার পক্ষে জেরা করেন তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। জেরা শেষে মামলার পরবর্তী কার্যক্রমের তারিখ ১০ আগস্ট ধার্য করা হলেও অনুপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর গত ৩ সেপ্টেম্বর পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে বিএনপির নেত্রীর অনুপস্থিতিতে মামলার কার্যক্রম চলে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ৫ এপ্রিল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত তাকে জামিন প্রদান করেন।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার প্রাক্তন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকার প্রাক্তন মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক।

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- মাগুরার প্রাক্তন সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রাক্তন সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

দুর্নীতির দুই মামলায় ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুবেদ রায়।



মন্তব্য চালু নেই